বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হার্নিয়া বাম পাশে, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কাটল ডান পাশ

  •    
  • ২০ ডিসেম্বর, ২০২০ ২৩:২৫

‘আমি শেষে রোগীকে বলেছি, যেহেতু একপাশের অপারেশন আরেক পাশে হয়েছে তাহলে যেপাশে করাতে হবে সেটিও তো করতে হবে। তাই আপনার যে সার্জন পছন্দ তাকে দিয়ে আমি বিনামূল্যে অপারেশন করিয়ে দেই। তারা রাজি হয়েছিল, আবার শেষে বলছে এখানে চিকিৎসা করাবে না।’

বরিশাল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে পঙ্গুত্বের শঙ্কায় ৪৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।

চিকিৎসকের ভুলের বিষয়টি রোগীর কাছে ধরা পড়লে হাসপাতালে ভর্তির কাগজপত্র লুকিয়ে ফেলে কর্তৃপক্ষ।

পরে ‘কারও কাছে ভুল চিকিৎসার কথা বলবে না’ শর্তে ওই কাগজ ফেরত দেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী রোগী। তিনি বর্তমানে ওই হাসপাতালের ৫১৪ নম্বর কেবিনের ১০ নং শয্যায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ইসতিয়াক আহম্মেদ বলেছেন, ‘যেভাবেই বলি অপারেশনে ওই চিকিৎসক ভুল করেছেন। এখন রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই।’

যদিও অভিযুক্ত চিকিৎসক এমএস রহমান সুমনের দাবি, তিনি কোনো ভুল করেননি।

নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মানিক গত ২২ নভেম্বর ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসক এমএস রহমান সুমনকে দেখান। শারীরিক পরীক্ষা শেষে তিনি জানান, মানিক হার্নিয়া রোগে আক্রান্ত। এজন্য তার বাম পাশে অপারেশন করাতে হবে। প্রেসক্রিপশনেও নিজ হাতে ওই চিকিৎসক লিখে দেন বাম পাশে হার্নিয়া হয়েছে।

মানিক বলেন, ‘নভেম্বর মাসে অপারেশনের কথা বললেও আমার অফিসে ছুটি না থাকায় ডিসেম্বরে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিই। ১৭ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হই। পরের দিন সেই ডাক্তার (সুমন) আমার অপারেশন করেন। আমার হুশ ফেরার পর হাত দিয়ে দেখি তিনি বাম পাশে হার্নিয়ার কথা বললেও ডান পাশে অপারেশন করেছেন। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা কাগজপত্র নিয়ে যান। শেষে শর্ত সাপেক্ষে ওই কাগজ ফেরত পাই। ‘ভুলটি ধরা পরার পর এখন অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করেছে, যেন ভুল চিকিৎসার বিষয়টি কোথাও না বলি। কিন্তু আমি যেমন ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছি, আর কেউ যেন সেই পরিণতি ভোগ না করেন আমি সেই ব্যবস্থা চাই।’

মানিক বলেন, ‘আমি রোগ থেকে বাঁচতে নিজের টাকা খরচ করতে এখানে এসেছি। তাদের করুণা পেতে নয়। কিন্তু তারা টাকাও নিল আর আমার একটি অপারেশনের কাজে দুটি অপারেশনের ব্যবস্থা করল। তাতে তো আমি পঙ্গু হয়ে যাব। আমি আইনের আশ্রয় নেব।’

হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ইসতিয়াক আহম্মেদ বলেন, ‘যুক্তি তর্ক করলে অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্তু এটি ভুল হয়েছে সেটি মানতেই হবে। অভিযোগ শুনে আমি ওই সার্জনের সঙ্গে কথা বলেছি, রোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। এ নিয়ে অনেক কিছুই বলা হয়ত যাবে, কিন্তু সমাধান তো করতে হবে।

‘আমি শেষে রোগীকে বলেছি, যেহেতু একপাশের অপারেশন আরেক পাশে হয়েছে তাহলে যেপাশে করাতে হবে সেটিও তো করতে হবে। তাই আপনার যে সার্জন পছন্দ তাকে দিয়ে আমি বিনামূল্যে অপারেশন করিয়ে দেই। তারা রাজি হয়েছিল, আবার শেষে বলছে এখানে চিকিৎসা করাবে না।’

রোগী যে শারীরিক যে ক্ষতির মুখে পড়েছে সেটি কীভাবে পূরণ করবেন প্রশ্নে ডা. ইসতিয়াক বলেন, ‘এই ক্ষতিপূরণ আসলে আমি কীভাবে পুষিয়ে দেবো সেটি আমারও জানা নেই। তবে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এখন দায়িত্ব।’

তবে চিকিৎসক সুমন এখন বলছেন উল্টো কথা। তিনি বলেন, ‘অপারেশনে তার দুই পাশেই হার্নিয়া পাওয়া গেছে। একটি অপসারণ করেছি। আরেকটি করতে ছয় সপ্তাহ সময় লাগবে।’

রোগীর তো বাম পাশে হার্নিয়া অপারেশন করানোর কথা বলে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ডান পাশ কেন কাটলেন, এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি সার্জন সুমন।

এ বিভাগের আরো খবর