সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। এ জন্য তিনি কূটনীতিক তৎপরতার পাশাপাশি জনসচেতনতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছেন।
বিজিবি এ বিষয়ে কাজ করছে বলেও জানান সীমান্তরক্ষী বাহিনীটির প্রধান।
গত দুই দশক ধরেই সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে বড় কাঁটা হয়ে আছে। গত এক দশকে এসব ঘটনা আগের চেয়ে কমে আসলেও এখনও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছে বিএসএফের গুলিতে। বিজিবি-বিএসএফের আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের সরকারের মধ্যেও এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার কথা হয়েছে।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জাতীয় সংসদে জানান, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়াল সামিটেও সীমান্ত হত্যা নিয়ে কথা হয়। আর মোদি অঙ্গীকার করেন, বিএসএফ আর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে না। যদিও ভারত এমন অঙ্গীকার নতুন করেনি।
বিজিবি দিবসের বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে সালাম গ্রহণ করছেন মহাপরিচালক
বিজিবি-বিএসএফের আলোচনাতেও ভারত একাধিকবার একই অঙ্গীকার করেছে।
বিজিবি প্রধান বলেন, ‘এখন কূটনৈতিকভাবে আমরা আমাদের দিক থেকে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি যেন সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে পারি।
‘আমরা সীমান্তবর্তী মানুষজনকে সচেতন করার চেষ্টা করছি যেন তারা অবৈধভাবে বর্ডার পার না হন। সীমান্তবর্তী এলাকায় যেসব জনপ্রতিনিধি আছেন উনাদের মাধ্যমে জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যেন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা বা সীমান্তে অপরাধে জড়িত না হয়ে পড়েন।’
বিজিবি দিবসে একাত্তরের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বাহিনীটির সদস্যরা
বিজিবি দিবসের আনুষ্ঠানিকতা
সকাল নয়টায় পিলখানায় বিজিবির রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে ‘সীমান্ত গৌরব’ এ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে হয় বিশেষ দরবার।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় এবার দরবার হয় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে। এখানে বাংলাদেশের সকল প্রান্ত হতে বিজিবি সদস্যরা যুক্ত ছিলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বাহিনীর সদস্যদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দায়িত্ব পালনে জোর দেন।
করোনা পরিস্থিতিতে বিজিবি মহাপরিচালকের বিশেষ দরবার হয়েছে ভার্চুয়ালি
দরবার শেষে অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারি সহকারী পরিচালক এবং অনারারি সহকারী পরিচালক থেকে অনারারি উপপরিচালক পদে পদোন্নতি প্রাপ্তদের র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।
সেই সঙ্গে বিভিন্ন খাতে অবদানের জন্য পদক এবং শ্রেষ্ঠ ব্যাটালিয়ন ও রানারআপ ব্যাটালিয়ন, শ্রেষ্ঠ কোম্পানি ও বিওপি কমান্ডারদের পুরস্কার দেয়া হয়। সেই স্েঙগ মহাপরিচালকের অপারেশন ও প্রশাসনিক ইনসিগনিয়াসহ প্রশংসাপত্র দেয়া হয়।
পিলখানাসহ বিজিবির সব রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ও প্রতিষ্ঠানে কেক কাটা ও প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।