কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর মামলায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান, সবুজ হোসেন ও হৃদয় আহমেদ।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, চার জন মিলে বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে। জড়িত আরেক আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে। বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে হাতুড়ি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে ভাস্কর্যটি। শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সেখানে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।ভাস্কর্যটি কুমারখালী উপজেলার কয়া মহাবিদ্যালয় চত্বরে অবস্থিত। ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তার ভাস্কর্য উদ্বোধন করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বাঘা যতীনের ভাস্কর্য। ছবি: নিউজবাংলা
এই ভাস্কর্য সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল না বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি মজিবুর রহমান। সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকার কারণ হিসেবে অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, বাজেট স্বল্পতা।
কলেজের অধ্যক্ষ হারুনার রশীদ শুক্রবার বলেন, ‘ভাস্কর্যের নিরাপত্তায় মিটিং করার কথা ভাবছিলাম। কিন্তু এরই মধ্যে ঘটে গেল দুর্ঘটনা। আসলে মিটিং করেও কোনো লাভ হতো না, সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে যে অর্থের প্রয়োজন তার সংস্থান নেই।’
আরও পড়ুন: সেই অকুতোভয় বাঘা যতীন
ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিষয়ে কথা বলার জন্য পুলিশ কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক, অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ, নৈশপ্রহরী খলিলুর রহমান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানকে থানায় নিয়েছিল।
পরে অধ্যক্ষ হারুন অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।
শুক্রবারই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন। এই ভাস্কর্য কেন সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়নি এ প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সিরাজুল ইসলামকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দিলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাঘা যতীনের জন্ম ১৮৭৯ সালে কয়া গ্রামের মামার বাড়িতে। তার পৈত্রিক নিবাস ঝিনাইদহে। তার আসল নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।১৯১৫ সালে ৩৬ বছর বয়সে ভারতের বালেশ্বর বুড়িবালামের তীরে ব্রিটিশদের সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধে তিনি শহিদ হন।গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তা মোড়ে রাতের আঁধারে ভাঙচুর করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য। সেই ঘটনাটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। আর ফুটেজ পর্যালোচনা করে স্থানীয় ইবনি মাসউদ কওমি মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।আদালতে চার জনই এর দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা ফয়জুল করীমের বয়ান শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করেছে।