পদ্মা সেতু নিয়ে একটি মহল এখনও বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলে আক্ষেপ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, এই সেতুতে স্বচ্ছতার ঘাটতি ছিল না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো অর্থ খরচ হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে কোনও প্রকার অনিয়ম হয়নি এবং স্বচ্ছতার সামান্যতম ঘাটতিও ছিল না। এখানে একটি টাকাও এদিক সেদিক হওয়ার কোনও উপায় ছিল না।’
শুক্রবার সেতুভবনে বিজয় দিবসের এক আলোচনায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
গত ১০ ডিসেম্বর দেশের সবচেয়ে বড় সেতুটির পুরোটা দৃশ্যমান হওয়ার পর এ নিয়ে তৈরি হয়েছে উচ্ছাস। তবে সেতুটি চালু করতে আরও এক বছরের মতো সময় লাগবে বলে আগেই জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
এই সেতুটি নির্মাণ নিয়ে নানা কিছু ঘটেছে দেশে। বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে সরকারবিরোধীরা করেছে তীব্র আক্রমণ। পরে কানাডার আদালত এই অভিযোগকে বানোয়াট, শোনা কথা ও গালগপ্প বলার পর থেমেছে সেসব বক্তব্য।
আবার এই সেতুর নকশা পরিবর্তন করে দোতলা সেতু করার পর প্রাথমিক পরিকল্পনার তুলনায় বাড়ে পদ্মা সেতুর খরচ। সবশেষ মূল্যায়ন অনুযায়ী ৩০ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে।
সরকারবিরোধীরা এই খরচ বৃদ্ধি নিয়ে বারবার কথা বলছেন।
গত ১০ অক্টোবর শেষ স্প্যানটি বসানোর পর ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর পুরোটাই দৃশ্যমান হয়েছে
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে যারা আজ অনিয়মের কথা বলেন, তারা অতিরিক্ত ব্যয়ের কথা বলেন। তাদের বলব, আপনারা বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করছেন।
‘নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতু নির্মিত হয়েছে। স্বচ্ছভাবে পদ্মা সেতুর কাজ আমরা করেছি। আমি মন্ত্রী হিসেবে আমার এলাকার একজন লোককেও এখানে চাকরি দিতে যাইনি। এ সুযোগ আমি নিজেও নেইনি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে বিশ্বব্যাংক ভুল স্বীকার করে, সেখানে বাংলাদেশের একটি স্বার্থান্বেষী মহল এখনও বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। ইনশাআল্লাহ ২০২২ সালে সেতু দিয়ে পরিবহন চলবে। আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।’
পদ্মা সেতুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসীম সাহসের প্রতীক উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সাহস একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কন্যারই রয়েছে, তা তিনি প্রমাণও করেছেন।’
নালিশ দেয়াই বিএনপির কাজ
বিএনপির সমালোচনাও করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বলেন, বিএনপি দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির নীলনকশা তৈরি করে স্বার্থসিদ্ধির অপচেষ্টায় মেতেছে। এসব অপচেষ্টা অতীতের মতো বুমেরাং হবে।
কাদের বলেন, ‘যারা মন ও মননে এদেশকে মেনে নিতে পারেনি, তারাই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তিবলয়কে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। বিএনপি কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধ ও সার্বভৌমত্বের কথা বলে অথচ বিদেশিদের কাছে নালিশ দেওয়াই এখন তাদের প্রধান কাজ।
‘স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক দল হয়ে বিজয়ের মাসে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রকাশ্যে বিদেশি শক্তির নৈতিক সাহায্য চাওয়া বিএনপির দেউলিয়াত্বের লক্ষ্মণ। জনগণ এখন অনেক সচেতন, তাদের নেতিবাচক রাজনীতিতে সাড়া দেয় না বলে বিএনপি জনগণের উপর প্রতিশোধ নিতে চায়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগেই আর্থ সামাজিক অধিকাংশ সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান পার্লামেন্টে বাংলাদেশের কথা আলোচনা হয়, তারা এখন বাংলাদেশ হতে চায়।