ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মিডিয়ায় যেভাবে ঢাকঢোল পেটানো হয়, তদন্ত কাজে সেভাবে তার প্রতিফলন পড়ছে না বলে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করে।
ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে করা দুই মামলায় জামিন শুনানির এক পর্যায়ে আদালত বলে, ‘কোনো কোনো বিষয়ে মিডিয়ায় এমন ঢাকঢোল পেটাবেন, অথচ মামলার তদন্তে তার প্রতিফলন থাকে না।
‘আমরা পুলিশপ্রধানকে একটা নির্দেশনা দিয়ে দেব, বিশেষ করে যখন নতুন কোনো বিশেষ আইন আসে, তখন তদন্ত কর্মকর্তাদের যেন এই সমস্ত বিষয়ে তারা কীভাবে তদন্ত করবেন- সে বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।’
এরপর আদালত সাংবাদিক কাজলকে দুই মামলায় জামিন দেন।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, সাংবাদিক কাজল দীর্ঘ দিন ধরে জেলে রয়েছেন। এর আগে ৫৩ দিন তাকে গুম করে রাখা হয়েছিল। এরপর ৩ মে তাকে দুই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলায়ও কাজলকে জামিন দেয় আদালত। ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পী।
গত ২৪ নভেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলায় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে জামিন দেয় হাইকোর্ট।
ওই দিন হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করা হয়। তিনি হাজির না হওয়ায় হাইকোর্ট অসন্তোষ জানায়। পরে তাকে আবার তলব করা হয়।
গত ৯ মার্চ শেরেবাংলা নগর থানায় কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলাটি করেন মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর।
১০ ও ১১ মার্চ হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি মামলা হয়।
গত ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।
ঢাকা থেকে নিখোঁজের ৫৩ দিন পর গত ২ মে রাতে যশোরের বেনাপোলের ভারতীয় সীমান্ত সাদিপুর থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে কাজলকে আটক করার কথা জানায় বিজিবি।