রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র জিসান হাবিব (১৮) হত্যা মামলায় ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগ।
বৃহস্পতিবার উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ উত্তরা পূর্ব থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
জিসান নােয়াখালীর সােনাইমুড়ীর খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পুলিশ জানায়, শুরুতে প্রধান আসামি সুন্দরী সুমন (২৭) ও আরেক আসামি স্বপনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাে. বিপ্লব (২৫) ও তৈয়ব আলীকে (১৬) নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার বাঘাইকান্দী চর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জড়িত অন্য আসামি জাহাঙ্গীর ব্যাপারী (২৪), তানভীর রহমান নেহাল (১৮), মাে. জিহাদ (২৪), নূরুল ইসলাম রাব্বি (২২), মাে. রাকিবকে (২০) গাজীপুরের টঙ্গী ও ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
শহিদুল্লাহ বলেন, এই দলের সদস্যরা আব্দুল্লাহপুরসহ উত্তরা এলাকায় ছিনতাই করত। ঘটনার দিন জিসান হাবিবের মােবাইল ছিনতাই করার সময় জিসান ও তার ফুফাতাে ভাই রুহুল আমিন বাস থেকে নেমে ছিনতাইকারী হৃদয়কে ধরে ফেলেন। এ সময় দলের অন্য সদস্য বিপ্লব, কবির ও সুন্দরী সুমন হৃদয়কে ছাড়ানাের জন্য আসেন।
তিনি আরও বলেন, এ সময় প্রধান অভিযুক্ত বিপ্লব ও কবির এলােপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে জিসান হাবিব এবং রুহুল আমিনকে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়।
দলটি ছিনতাই কীভাবে করত, তা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ জানান, ছিনতাইকারীদের একটি গ্রুপ বিভিন্ন স্থানে পাহারা দেয় কোনো পুলিশ সদস্য কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আশপাশে আসছে কি না। তা ছাড়া গ্রুপের কোনাে একজন ধরা পড়লে অন্য ৩-৪ জন সদস্য মুরুব্বি সেজে ঘটনাস্থলে আসে। তারা ‘কী হয়েছে কী হয়েছে ভাই’ বলে আটক ছিনতাইকারীকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
তিনি জানান, ঘটনার আগে জড়িত ছিনতাইকারীরা বাংলা মদ ও বিয়ার কিনে খেয়েছিলেন। তাদের প্রায় সব সদস্যের বিরুদ্ধে চুরি, মাদক, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে উত্তরার আবদুল্লাহপুর এলাকায় জিসান ও তার আত্মীয় রুহল আমিন (১৭) নামে আরেক শিক্ষার্থী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে। পরে ঘটনাস্থলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন জিসান। রুহল আমিন আহত হন।
জিসানের বাড়ি নোয়াখালী সোনাইমুড়ি উপজেলার বিহেরগাঁও গ্রামে। গত ৭ নভেম্বর নোয়াখালী থেকে তিনি ধামরাইয়ে ফুপুর বাড়িতে বেড়াতে আসেন।
পরে ৯ ডিসেম্বর ফুপুকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতেই তারা ধামরাই থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসেছিলেন। বিমানবন্দর থেকে ধামরাইয়ে ফেরার পথে আবদুল্লাহপুরে ছিনতাইয়ের শিকার হন তারা।