বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মুখে মুখে মুক্তিযুদ্ধ-বঙ্গবন্ধু

  •    
  • ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১২:৫৫

মানুষ যখন সৃজনশীল, তখন সবকিছুতেই সে তার ছাপ রাখে। ডিসেম্বর মাসে মাস্কে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ।

রাজধানীর ধানমন্ডির আট নম্বর লেকে বসে গিটার বাজাচ্ছিলেন নজরুল কবির। তার মুখের লাল-সবুজের মাস্কে লেখা ‘আমিই বাংলাদেশ’।

বললেন, ‘ট্রেন্ডি জিনিস আমার সবসময় ভালো লাগে। তার ওপর দেশ রিলেটেড হলে ইমোশনটাই আলাদা। মাস্কে মুখ ঢেকে যাচ্ছে তাতে কী? সেই মাস্ক নিজেই কথা বলতে পারে।’

সামান্য এক চিলতে কাপড়ের মাস্ক। তাতে ঠিকমতো কোনো ডিজাইন ফুটিয়ে তোলাই কঠিন। কিন্তু মানুষ যখন সৃজনশীল, তখন সবকিছুতেই সে তার ছাপ রাখে। ডিসেম্বর মাসে মাস্কে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ।

ফ্যাশন হাউজ ‘বিশ্বরঙ’-এ শাড়ি আর পাঞ্জাবি কিনতে এসেছেন দম্পতি আসিফ-রুমি। পতাকার থিমের ওপর সবুজ পাঞ্জাবি চয়েস করলেন আসিফ হক। তার সঙ্গে মিলিয়ে সবুজ পাড়ের মধ্যে লাল রঙের জামদানি বেছে নিলেন রুমি হক।

এই দম্পতি জানান, বিজয় দিবসকে ঘিরেই কেনাকাটা করছেন তারা। একই সঙ্গে অনলাইনে পতাকা থিমের দুটি মাস্কও অর্ডার দিয়ে রেখেছেন।

আসিফ হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই মাস বিজয়ের আনন্দের। দেশপ্রেম সারা বছর থাকেই। তবে ঘটা করে পালন করার মধ্যে বিশেষত্ব আছে। বাঙালির বুক পকেটে পতাকা রয়েছে, এটা ভাবতেই মনে শান্তি লাগে। আর মাস্ক তো এখন অপরিহার্য জিনিস। ক্যারি করতেই হবে। সে ক্ষেত্রে যখন অনলাইনে দেখলাম যে ম্যাচিং মাস্ক আছে, অর্ডার করে দিলাম।’

অনলাইন ঘেঁটে দেখা যায়, পতাকা, বঙ্গবন্ধু এই দুটো থিমই সবচেয়ে বেশি। একটি মাস্কে দেখা যায়, সুতি কাপড়ের মধ্যে পতাকা আঁকা, লাল বৃত্তে বঙ্গবন্ধুর হাস্যোজ্জ্বল ছবি। অন্য একটিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের তর্জনী ওঠানো ছবি। একটিতে লেখা ‘এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

যেসব ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের চাহিদামাফিক মাস্ক বানিয়ে দেয়, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘মাস্ক ইউ’। এটি একটি অনলাইনভিত্তিক মাস্ক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। আরও রয়েছে ‘মাস্ক ম্যানিয়া’, ‘ফেবরিলাইফ’, ‘মেঘ’ ইত্যাদি। এরা সবাই অন্যান্য নকশার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ থিমেও মাস্ক নিয়ে এসেছে।

মাস্ক ইউ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম এ মারুফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাস্ক বা মুখোশ জিনিসটাকে সবসময় নেগেটিভ অর্থে দেখা হতো। বিশেষ করে আমাদের দেশে। এখন তা থেকে বেরিয়ে এসে মানুষ এটিকে অন্যান্য পোশাকের মতো করেই দেখছে। মানুষ বুঝতে পেরেছে, মাস্ক নিজেও আওয়াজ তুলতে পারে।

‘এখন ডিসেম্বর মাস। বিজয়ের মাস। চিন্তা করলাম, এই মাস্কই জানাবে দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা। স্মরণ করাবে বঙ্গবন্ধুর কথা। মনে করিয়ে দেবে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে। সেই চিন্তা থেকেই মাস্কে নিয়ে এসেছি স্বাধীন বাংলার পতাকা, বঙ্গবন্ধুকে।’

২০০২ সালে যাত্রা শুরু করা ‘মেঘ’ বিভিন্ন দিবসকে ঘিরে ফতুয়া, কামিজ, শাড়ি-পাঞ্জাবি ডিজাইন করে। ২০২০ সালে এসে মাস্কেও ফুটে উঠেছে সেই আমেজ।

এটির প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ওয়াহিদুল ইসলাম মিল্টন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার উদ্দেশ্য দেশীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে তুলে ধরা। সেটাই করে এসেছি এতদিন, কখনও ভাবিনি, মাস্কের মধ্যেও এমন কিছু করব কোনোদিন। আজ নতুন একটি জামার থেকে মাস্কের চাহিদা বেশি। কারণ এটা এখন আর চয়েস না, এটা বাধ্যতামূলক।’

একই কথা বলছেন ‘ফেবরিলাইফ’-এর সেলস ম্যানেজার নিয়ন হক।

‘মাস্ক ম্যানিয়া’র সিনিয়র ম্যানেজার এস এম ফয়সাল নিউজবাংলাকে বলেন, “আমাদের একটি মাস্ক আছে, যাতে পতাকার পাশে লেখা ‘আমিই বাংলাদেশ’। এটা যখন একটা মানুষ পরবে, তখন মুখ ঢাকা থাকলেও মনের ভাব প্রকাশ পাবে। গোটা বাংলাদেশকে সে অউন করতে পারবে। সার্বক্ষণিক সে নিজেকে একজন যোদ্ধা ভাবতে পারবে।’

এ বিভাগের আরো খবর