ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কেএম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনের পক্ষে দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম শুনানি করেন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাখাওয়াত উল্লাহ ভূইয়া, গোলাম ফাত্তাহ।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
গত ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
মামলায় আনা অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্ট (খাবার), রেস্টুরেন্ট (মদ), স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। এসবের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।
এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়াবাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশানে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার এবং তার স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে পাপিয়ার বাসা থেকে র্যাবের উদ্ধার করা ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকা দামের গাড়িরও কোনো বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ওরফে পিউকে আটক করে র্যাব-২ এর একটি দল। এ সময় সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া পিউ নামেই বেশি পরিচিত। এই নেত্রীর প্রকাশ্য আয়ের উৎস গাড়ি বিক্রি ও সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা। তবে এর আড়ালে তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা করতেন। কোনো কাজ বাগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পাঁচতারকা হোটেলে সুন্দরী তরুণীদের পাঠিয়ে মনোরঞ্জন করতেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি শেরে বাংলানগর থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি মামলা হয়।