কক্সবাজারে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে হত্যার ঘটনায় জেলায় সে সময়ের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
ঘটনার প্রায় সোয়া চার মাস পর রোববার কক্সবাজার আদালতে ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. খাইরুল ইসলাম। পরে এ বিষয়ে ঢাকায় বিস্তারিত জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তিনি এই সুপারিশের কথা জানান।
এই মামলায় টেকনাফ থানার সে সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ, যার গুলিতে সিনহা নিহত হয়েছিলেন, সেই বরখাস্ত ইনস্পেক্টর লিয়াকত আলীসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।
গত ৩১ জুলাই এই হত্যার সময় জেলায় পুলিশের দায়িত্বে ছিলেন এ বি এম মাসুদ হোসেন। সিনহার মৃত্যুর পর প্রদীপ কুমার দাশ তাকে ফোন করেন। সেই ফোনালাপ সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়। এতে শোনা যায়, এসপি মাসুদকে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন ওসি প্রদীপ। আর প্রদীপকে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বললে তিনি যেতে বলেন।
মেজর সিনহা হত্যা মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার সে সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ
পরে সিনহার বোন যে মামলা করেন, তাতে এসপি মাসুদকেও আসামি করার আবেদন করা হয়। তবে এসপির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পেয়ে তাকে আসামি করেনি আদালত।
আলোচনা সমালোচনার মধ্যে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাসুদ হোসেনকে কক্সবাজার থেকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। এখনও তিনি সেখানেই আছেন।
তার বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম কিছু বলতে রাজি হননি।
কক্সবাজার আদালতে মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি পুলিশ সদস্যরা
র্যাবের অভিযোগপত্রে সিনহার হত্যার পর পুলিশ সুপারের ঘটনাস্থলে না যাওয়াসহ অন্যান্য বিষয়কে অপেশাদার আচরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
র্যাবের মুখপাত্র আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘সার্বিক বিবেচনায় পুলিশ সুপারের তদারকিতে ঘাটতি ছিল। পুলিশকে বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে।’
এসপি মাসুদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তিনি ফোন রিসিভ না করায়।
পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুপারিশের বিষয় দেখবে পুলিশ সদর দফতর। আর আমার এখানে তিনি এসেছেন ঘটনার পর।’