অক্সিজেন সিলিন্ডার, সিলিন্ডার রিফিলিং ও অক্সিজেনের ব্যবহার মূল্যসহ করোনাইরাসের ১০টি জরুরি পরীক্ষার নতুন করে মূল্য নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই নতুন এই মূল্য কার্যকর শুরু হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই নতুন মূল্য তালিকা সংক্রান্ত প্রতিবেদন রোববার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হয়।
পরে হাইকোর্ট দেশের যেসব সরকারি-বেসরকারি হাসাপতাল করোনাভাইরাসের চিকিৎসা দিচ্ছে, সেসব হাসপাতালের সামনে এ মূল্যতালিকা উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে। আদেশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে তালিকা প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে।
যে ১০টি পরীক্ষার মূল্য নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে:
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিবিসি পরীক্ষার স্থিরমূল্য ধরা হয়েছে ৫০০ টাকা। এ ছাড়া সর্বনিম্ন ৪০০ ও সর্বোচ্চ মূল্য ৬০০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিআরপি পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০ টাকা। এ ছাড়া সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৬০০ ও ৯০০ টাকা। সিরাম ক্রিয়েটিনাইন পরীক্ষার স্থিরমূল্য ৪০০ টাকা নির্ধারণের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৩০০ ও ৬৫০ টাকা নির্ধারণের অনুমোদন চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এলএফটি নামের পরীক্ষাটির স্থিরমূল্য নির্ধারণ করেছে ১০০০ টাকা। এর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫০ ও ১৬০০ টাকা। এস ইলেক্ট্রোলাইটস পরীক্ষাটির ১০০০ টাকা স্থিরমূল্যের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। আর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য চাওয়া হয়েছে ৮৫০ ও ১৪৫০ টাকা।
ডি. ডিমার পরীক্ষার স্থিরমূল্য ধরা হয়েছে ১৫০০ টাকা। আর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ১১০০ ও ৩২০০ টাকা। এস. ফেরিশন পরীক্ষার জন্য স্থিরমূল্য ধরা হয়েছে ১২০০ টাকা। আর এর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ১০০০ ও ২২০০ টাকা।
এস. প্রোকালসিটোনিন পরীক্ষাটির স্থিরমূল্য ২০০০ টাকা ধরা হয়েছে। এর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয় ১৫০০ ও ৪৫০০টাকা। সিটিস্ক্যান ( চেস্ট) এর স্থিরমূল্য চাওয়া হয়েছে ৬০০ টাকা। এর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৫০০০ ও ১৩০০০ হাজার টাকা করার অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। চেস্ট এক্স-রে (অ্যানালগ) এর স্থিরমূল্য চাওয়া হয়েছে ৪০০ টাকা।
চেস্ট এক্স-রে (ডিজিটাল) এর স্থিরমূল্য চাওয়া হয়েছে ৬০০ টাকা। এদিুটি এক্স-রের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য চাওয়া হয়েছে যথাক্রমে ৩০০ ও ৫০০ এবং ৫০০ ও ৮০০ টাকা।
অক্সিজেন সিলিন্ডারের মূল্য
আর অক্সিজেন সিলিন্ডার, রিফিলিং ও ব্যবহার মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত দুটি পরিমাণের অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বাজারে ১ হাজার ৩৬০ লিটার বা ১ দশমিক ৩৬ কিউবিক মিটার সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য ১ হাজার ৪০০ টাকা। আর ৬ হাজার ৮০০ লিটার বা ৬ দশমিক ৮ কিউবিক মিটার সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
অক্সিজেন রিফিলিংয়ের মূল্য কর ও শুল্কসহ প্রতি কিউবিক মিটারের মূল্য ৬৫ টাকা নির্ধারণের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে অধিদফতর পক্ষ থেকে। তবে সিলিন্ডার পরিবহন ব্যয় এর বাইরে ধরা হবে।
অক্সিজেনের ব্যবহার মূল্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, একক অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার সিস্টেমে ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহার করলে একজন রোগীকে দিতে হবে ১০০ টাকা, ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ১২৫ টাকা ও ১০ থেকে ১৫ লিটার ব্যবহারের জন্য ১৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
আবার সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (জেনারেটর বেইজড) একজন রোগীর ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০, ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ৩০০ ও ১০ থেকে ১৫ লিটার ব্যবহারের জন্য ৩৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণের অনুমোদন চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এ ছাড়া সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (লিক্যুইড অক্সিজেন ট্যাংক বেইজড) সিস্টেমে ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেনের জন্য ১২০, ৬ থেকে ৯ লিটার ব্যবহারের জন্য ২৫০ ও ১০ থেকে ১৫ লিটার ব্যবহারের জন্য ৩০০ টাকা মূল্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
আর সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম প্লাস হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা দিয়ে ৬০ থেকে ৮০ লিটার অক্সিজেন ব্যবহার করলে তার মূল্য ৫০০ টাকা নির্ধারণ করার অনুমোদন চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।