কক্সবাজারের টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে র্যাব।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনহা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী টেকনাফ থানার বরখাস্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ। সিনহাকে গুলি করেন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
রোববার সকাল ১০টার দিকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৪-এর বিচারক তামান্না ফারাহর আদালতে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম।
খায়রুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, মামলার চার মাস আট দিনের মাথায় চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হলো।
চলতি বছরের জুলাইয়ে একটি ডকুমেন্টারির শুটিংয়ের জন্য তিন সহযোগীসহ কক্সবাজারের নীলিমা রিসোর্টে ওঠেন সিনহা। ডকুমেন্টারিটি ‘জাস্ট গো’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের জন্য শুট করা হচ্ছিল।
৩১ জুলাই সিনহা শামলাপুর পাহাড়ে যান। রাত ১০টার দিকে কক্সবাজারে ফেরার পথে শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে তাদের গাড়ি থামিয়ে সিনহাকে গুলি করা হয়।
৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয় জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। প্রধান আসামি করা হয় পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। দুই নম্বর আসামি করা হয় ওসি প্রদীপকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের সঙ্গে পরামর্শ করে লিয়াকত সিনহাকে গুলি করেন। এরপর প্রদীপ ঘটনাস্থলে গিয়ে জুতা দিয়ে আঘাত করে সিনহার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা বিকৃত করার চেষ্টা করেন।
মামলার তিন নম্বর আসামি টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দুলাল রক্ষিত। দুলাল সিনহার মৃত্যুর পর মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন।
অভিযুক্ত ১৫ জনের মধ্যে এক জন ছাড়া বাকি সবাই জেলহাজতে আছেন। র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ১৪ জন হলেন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, ওসি প্রদীপ, প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ওসি প্রদীপ ও প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা ছাড়া বাকি ১২ জন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।