কাঁধে রাইফেল ঝুলিয়ে দায়িত্ব পালনের যুগ শেষ। আধুনিকতার ছোঁয়া লাগতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ বহরে। কোমরে থাকবে ট্যাকট্যিক্যাল বেল্ট, যাতে গোজা থাকবে পিস্তল, হাতকড়া, ওয়্যারলেসসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি।
উন্নত বিশ্বের পুলিশের আদলে দেশের পুলিশ বাহিনীকে সাজাতে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ১০ হাজার সদস্যকে দেয়া হচ্ছে ট্যাকটিক্যাল বেল্ট। কনস্টেবল থেকে শুরু করে এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের দেয়া হবে এই সরঞ্জাম।
বছরের পর বছর ধরে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা কাঁধে রাইফেল নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এখন রাইফেলের বদলে তাদের দেয়া হবে ছোট পিস্তল। মূলত এই পিস্তল রাখার জন্যই সংযোজন করা হচ্ছে ট্যাকটিক্যাল বেল্ট। হাতে বা কাঁধে রাইফেল থাকলে তা বয়ে বেড়ানো যেমন কষ্টসাধ্য, আবার কোনো অভিযানে কিংবা অন্যান্য কাজে তা বাধা সৃষ্টি করে।
আধুনিক এই ট্যাকটিক্যাল বেল্টে থাকছে ছয়টি চেম্বার। এসব চেম্বারে প্রাথমিকভাবে থাকছে ছোট অস্ত্র, অ্যাক্সপেন্ডেবল ব্যাটন, ওয়্যারলেস সেট, ৫০০ মিলিলিটার পানির বোতল ও ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের জন্য ‘পজ মেশিন’। পরবর্তী সময়ে ট্যাকটিক্যাল বেল্টে বডি অন ক্যামেরা, টর্চলাইটসহ প্রয়োজনীয় আরও কিছু সরঞ্জাম যুক্ত করা হবে।
পরিবর্তন আসছে ওয়্যারলেস সেটেও। এখন থেকে সেট হাতে নিয়ে কথা বলতে হবে না। ট্যাকটিক্যাল বেল্টে যুক্ত ওয়্যারলেস সেটের জন্য কানে হেডফোন এবং পোশাকের কলার অথবা বোতামে থাকবে স্পিকার। কোমরের বেল্টে অস্ত্র ছাড়া বাকি সবকিছু থাকবে। বেল্ট হয়ে পিস্তলের জন্য নির্ধারিত চেম্বারটি চলে যাবে পুলিশ সদস্যদের ডান পাশের উরুতে।
পুলিশ সদর দফতরের লজিস্টিক বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা নিউজবাংলাকে জানান, ট্যাকটিক্যাল বেল্টের মূল স্লোগান হলো ‘হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং’। অর্থাৎ পুলিশের হাত থাকবে মুক্ত। এতে বিপদগ্রস্ত মানুষকে দ্রুত সহায্য করতে পারবে পুলিশ।
১৬ ডিসেম্বর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে এই বেল্ট হস্তান্তর করা হবে। প্রাথমিকভাবে ডিএমপির সাত হাজার ও সিএমপির তিন হাজার পুলিশ সদস্যকে ট্যাকটিক্যাল বেল্ট দেয়া হবে। পরবর্তী সময়ে পুরো বাহিনীকেই এর আওতায় আনা হবে।
ছোট অস্ত্র নিয়ে পুলিশের কাজে আরও গতি আসবে। একই সঙ্গে তাদের দেখতেও আধুনিক ও যুগোপযোগী লাগবে।
উন্নত দেশগুলোতে প্রয়োজন না হলে পুলিশের অস্ত্র প্রদর্শন করা হয় না। আবার অস্ত্র এমনভাবে সংরক্ষণ করা হয়, যেন প্রয়োজনে সেটি দ্রুত ব্যবহার করা যায়।
আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে এসব সরঞ্জাম। আপাতত অপারেশনাল ফোর্স, ফুট ও মোবাইল পেট্রোল টিম ও ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ট্যাকটিক্যাল বেল্ট দেয়া হবে। তবে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটসহ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বড় অস্ত্রের ব্যবহারে পরিবর্তন আসছে না।