বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যবিরোধীদেরকে রাষ্ট্রবিরোধী উল্লেখ করে এই ধরনের তৎপরতা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশ প্রধান এ কে বেনজীর আহমেদ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করা আর কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে শনিবার দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি পালন করেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করে সরকারি কর্মকর্তা ফোরাম। সমাবেশের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়, ‘জাতির পিতার সম্মান, রাখব মোরা অম্লান’।
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়ে আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমার দেশের সংবিধানের অংশ। বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানচিত্র দিয়েছেন, দিয়েছেন বাংলা ভাষার স্বীকৃতি। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর হামলা মানে সংবিধানের উপর হামলা, রাষ্ট্রের উপর হামলা, দেশের জনগণের উপর হামলা।’
তিনি বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন (একটা মহল) পেছনের দিকে টেনে নেবার চেষ্টা চলছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান করবে এদেরকে প্রতিহত করা হবে।’
রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করছে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক কিছু রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় একটি ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে দেশ। ভিডিও ফুটেজ দেখে স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসার চার ছাত্র ও শিক্ষককে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
বেনজীর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই হলো বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। তার ওপর হামলা মানে রাষ্ট্রের ওপর হামলা, সংবিধানের ওপর হামলা। আমরা জাতির জনক, দেশের স্বাধীনতা, রাষ্ট্রের জনগণের ওপর কোনো আঘাত আসতে দেব না।
‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেকোনো কর্মকাণ্ড আইন অনুযায়ী কঠোর হাতে মোকাবিলা করা হবে। এ দেশে জঙ্গিবাদের কোন উত্থান হতে দেয়া হবে না, সকল অপপ্রচার রুখে দেয়া হবে।’
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সরকারের ২৯টি ক্যাডারের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তারা।
আইজিপি বলেন, ‘রাষ্ট্র অবশ্যই তার যে বিধিবিধান আছে, দেশের যে আইন আছে তার মাধ্যমে তাদেরকে কঠোর হস্তে মোকাবেলা করবে। আমরা রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে, রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে ১৮ কোটি মানুষকে নিশ্চিত করতে চাই, আশ্বস্ত করতে চাই আমরা তাদেরকে কঠোর হস্তে মোকাবেলা করব। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচারণ, সংবিধানের বিরুদ্ধাচরণ।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসও। তিনি চান বক্তব্য শেষে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনী জয় বাংলা বলে বক্তব্য শেষ করবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।