দিনাজপুরের দাউদপুর সীমান্তের শূন্যরেখা এলাকায় মাদক কারবারিদের সংঘর্ষে এক ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ২ নম্বর কাটলা ইউপির সদস্যসহ চার জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই জন ভারতীয়।
শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার জামালপুর সীমান্তের ২৮৯/২৫ ও ২৬ এস পিলারের মাঝামাঝি শূন্যরেখা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আলিম উদ্দিন (৪৫) ভারতের জামালপুর গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে।
আহতরা হলেন- বিরামপুর উপজেলার ২ নম্বর কাটলা ইউপির সদস্য দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের মইনুল ইসলাম (৩৫), তার বড়ভাই মমিনুল ইসলাম (৪৫) এবং ভারতের জামালপুর গ্রামের আলম হোসেন ও আছিরুল ইসলাম।
সংঘর্ষের পর শুক্রবার বিকেলে জামালপুর সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন বিরামনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, মাদক বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত। প্রাণহানির ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
এসআই জানান, মাদক কেনাবেচার টাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের মানিক ইসলামের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক আলিম উদ্দিনের কথা কাটাকাটি হয়।
এ ঘটনার জেরে শুক্রবার শূন্যরেখা এলাকার একটি মসজিদে তাদের মধ্যে আবারও ঝগড়া হয়। পরে ওই দুই জনের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলিম উদ্দিনের ঘাড়ে কোপ দেয়া হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। আহত হন চার জন।
ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, আহতদের মধ্যে দুই বাংলাদেশিকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহত দুই ভারতীয় নাগরিক সংঘর্ষের পর পরই নিজ গ্রামে ফেরত গেছেন।
সীমান্তে উভয় দেশের নাগরিকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনার পর বিজিবি ও বিএসএফ কর্মকর্তাদের মধ্যে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হয়েছে। এতে বিজিবি-২০ ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর আবু নাঈম খন্দকার ও বিএসএফ-১৯৯ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক অজয় কুমার তিওয়াড়ী অংশ নেন। এতে ভাইগড় বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শওকত হোসেন ও দাউদপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
২০ ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর আবু নাঈম খন্দকার বলেন, সীমান্তে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় নতুন করে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে বাংলাদেশ অংশে গ্রামবাসীদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সৌজন্য সাক্ষাতের পর আলিম উদ্দিনের মরদেহ নিয়ে গেছে বিএসএফ।