বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুয়াশা আরও দুই দিন, বৃষ্টি হতে পারে কাল

  •    
  • ১১ ডিসেম্বর, ২০২০ ২১:০৯

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় আগামীকাল শনিবার বৃষ্টি হতে পারে। কুয়াশার এই অবস্থা কাটতে সময় লাগতে পারে দুই দিন। এরপর তাপমাত্রাও কমতে থাকবে।   

সারা দেশের নদী অববাবহিকায় বেশ কয়েক দিন ধরেই মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ছে। কুয়াশা পড়ছে পশ্চিম ও উত্তরের বিভিন্ন জেলায়। কোনো কোনো জেলায় সারা দিনও সূর্যের দেখা মিলছে না; জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত।

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে রাতের বেলায় পদ্মা নদীতে ঘন কুয়াশা পড়ায়। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং শিমুলিয়া-বাংলাবাজার দুই রুটেই ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রতি রাতেই। এতে ঘাটের দুই পারেই হচ্ছে যানজট।

কুয়াশার কারণে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উঠা-নামাও বিঘ্নিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে অবতরণ করানো হয়। পরবর্তী সময়ে অবশ্য আর এ ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় আগামীকাল শনিবার বৃষ্টি হতে পারে। কুয়াশার এই অবস্থা কাটতে সময় লাগতে পারে দুই দিন। এরপর তাপমাত্রাও কমতে থাকবে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে রংপুরে বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে এবং তা কোথাও কোথাও বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বছরের বাকি দিনগুলোয় আর কোনো ঝড়ের আশঙ্কা নাই। উত্তর অঞ্চলে, বিশেষ করে রংপুর-রাজশাহী অঞ্চলে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগে হালকা থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দুই দিন পরে কুয়াশা কেটে যাবে। তখন রাতের তাপমাত্রা কমে যাবে। তবে কুয়াশা কেটে যাওয়ার কারণে দিনের তাপমাত্রা বাড়বে।’

আগামী ১৫-১৬ ডিসেম্বরের পর দেশে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলেও জানান আবহাওয়াবিদ হাফিজুর।

অধিদফতরের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে পরিস্থিতি সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। আর পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষ দিকে তামপাত্রা কমতে পারে।

পঞ্চগড়ে কনকনে ঠান্ডা

পঞ্চগড়ে কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে।

হিমালয়ের খুব কাছে হওয়ায় প্রতি বছরই এ জেলায় তীব্র শীত পড়ে। জনজীবন হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয় সব বয়সী মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা।

পঞ্চগড়ে এ বছর নভেম্বর মাসেই তাপমাত্রা নেমেছে এক অংকে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা প্রায় অচল হতে বসেছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষ।

তেঁতুলিয়ার মহানন্দা পারের আব্দুর রহিম নিউজবাংলাকে বলেন, মহানন্দার পাথর তুলেই তার ছয় সদস্যের সংসার চলে। শীত এলে নদীতে নামা যায় না। পরিবার নিয়ে কষ্ট করতে হয়।

পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সিরাজ দৌলা পলিন জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পর পর একাধিক শৈতপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নামতে পারে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন জানান, প্রতি বছর শীতপ্রবণ এই এলাকার মানুষের কথা ভেবে সরকারিভাবে পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সুরক্ষিত রাখা হয়। এ বছর একই সঙ্গে করোনা ও শীত মোকাবিলা করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

সূর্যের দেখা নেই চুয়াডাঙ্গায়

চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ করেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ই হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে গ্রামের মানুষ।

শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে গোটা শহর। হাড় কাঁপানো শীতের কারণে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এ কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল ছিল কম। দুপুর বেলায়ও যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়।

আবহাওয়া অফিস বলছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

এদিকে শীত বাড়ায় গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছে লোকজন। বেশি ভিড় ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকানে। ভিড় জমছে ফুটপাতের শীতের পিঠার দোকানেও।

কৃষক অর্পণ সাহা বলেন, হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে। অনেকেই খড় জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে চাষাবাদে বেগ পেতে হচ্ছে। মৌসুমি ফসল ও বীজতলায় ক্ষতি হতে পারে।

শীতজনিত রোগ নিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নানা বয়সী মানুষ, বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা।

এদিকে জেলায় শীতের তীব্রতা বাড়লেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সাধারণ মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই দিন ধরে শীত কিছুটা বেড়েছে। আমরা শীতার্তদের জন্য ইতিমধ্যে জেলার চার উপজেলা ও প্রতিটি ইউনিয়নে কম্বল বিতরণের প্রস্ততি নিয়েছি।’

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন পঞ্চগড় প্রতিনিধি হোসেন রায়হান ও চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি)

এ বিভাগের আরো খবর