রাজধানীর খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া বাজার থেকে ত্রিমোহনী ব্রিজ পর্যন্ত জিরানী খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে এ অভিযান শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
অভিযান শুরুর পর দেখা গেছে, খালের জমি দখল করে কোথাও গড়া হয়েছে দোকান, কোথাও ঘরবাড়ি। আবার কিছু স্থানে পুরো খাল মাটি দিয়ে ভরাট করে রাখা হয়েছে। তবে নিচে পানি প্রবাহের জন্য বসানো হয়েছে পাইপ। শতাধিক প্রতিবন্ধকতার কারণে এই খালে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নেই। এতে করে জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান এবং তানজিলা কবির ত্রপার নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।
নড়াই নদীর ত্রিমোহনী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় কয়েকটি বাশের তৈরি দোকান উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে অভিযান শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত চলে এ অভিযান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবির ত্রপা বলেন, ‘খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম আজকে থেকে শুরু হয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমাদের নকশা অনুযায়ী খালের পাড়ে যত অবৈধ স্থাপনা থাকবে, সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। আমরা চেষ্টা করব পুরো খালটি উদ্ধারের।’
কী ধরনের স্থাপনায় খাল দখল করা হয়েছে? এমন প্রশ্নে তানজিলা কবির বলেন, ‘খাল দখল করে কিছু দোকান, আর কিছু বাড়ির অংশ রয়েছে। খালের অংশে যা কিছুই আছে সব উচ্ছেদ করা হবে। আমরা প্রথমদিনে খালের একপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। রবিবারে অন্য অংশের কাজ শুরু হবে।’
সিটি জরিপ ও সিএস ম্যাপ অনুযায়ী খাল উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে তানজিলা কবির বলেন, উচ্ছেদ কাজ শেষ হওয়ার পর খালটা প্রশস্ত করার জন্য ময়লা-আবর্জনা সরানো হবে। পরে আর স্থাপনা যাতে গড়ে উঠতে না পারে সেজন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, অভিযান শুরুর আগে খালের কতটুকু জায়গা দখল হয়েছে বা খালের জমি কতটুকু তা নির্ধারণ করে সতর্ক করেছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। সিটি জরিপ না সিএস অনুযায়ী উচ্ছেদ হবে তা জানানো হয়নি।
ত্রিমোহনী ব্রিজ সংলগ্ন দোকানি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমাদের নদী ও খালের জায়গা কতটুকু, সেটা আমরা জানি না। যখনই মাপার জন্য এসেছে, আমরা জিজ্ঞেস করেছি। তখন বলে, সরকার জানে। কতটুকু জায়গা আছে, সেটা জানাইলে আমাদের সুবিধা হয়। আমরা সে অনুযায়ী আগে থেকেই (স্থাপনা) সরিয়ে নিতে পারি।’
উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয় কাউন্সিলর মো. আকবর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা খালের সীমানা নির্ধারণের সময় যারা দখলে ছিল তাদের সতর্ক করেছি। এখন তা উদ্ধারের পালা। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর খালের প্রবাহ ঠিক করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে আর দখল না হয় সেজন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।’