বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের (সিয়েরো) নির্বাহী পরিচালক (ইডি) পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতার প্রতি ভারত সমর্থন জানিয়েছে।
ঢাকায় নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই সমর্থনের কথা জানান।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারিজনিত কারণে ভারতের ভিসা প্রাপ্তিতে বাংলাদেশিরা যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার আলোচনা করেছেন।
হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ ভারতীয় ভিসা ইতোমধ্যে দেয়া শুরু হয়েছে। বাকিগুলো কোভিড-১৯ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে দেয়া হবে।
বিক্রম কুমার সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ সরবরাহের চলমান প্রক্রিয়াটির কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি কোভিড ভ্যাকসিন কার্যকরভাবে বিতরণের জন্য বাংলাদেশি স্বাস্থ্য পেশাদারদের সক্ষমতা বাড়াতে তার সরকারের সহায়তার ইচ্ছার কথাও জানান।তিনি পারস্পরিক স্বার্থে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক পর্যায়ে আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের প্রণীত পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর পুনরোল্লেখ করেন।
ভারতের হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন।
উত্তরে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ধন্যবাদ জানান এবং তাঁর মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও শুভেচ্ছা জানান।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী নতুন স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে ভারতের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। বাংলাদেশের বেলায় সব ভারতীয়ই তাঁদের কণ্ঠে ঐক্যবদ্ধ- উল্লেখ করে তিনি ভারতের সংসদে বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তির বিষয়টি (এলবিএ) সর্বস্মতভাবে পাস হওয়ার উদাহরণ টানেন।তিনি ভারতের নবনিযুক্ত হাইকমিশনারকে স্বাগত জানান এবং দায়িত্ব পালনকালে সবরকম সহযোগিতারও আশ্বাস দেন।
বিক্রম কুমার কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজনে বাংলাদেশের খাদ্য এবং কৃষি খাতে বিনিয়োগে তাঁর দেশের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গৃহীত আগামী দিনের কর্মসূচি সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী এসব কর্মসূচি গ্রহণে সন্তোষ প্রকাশ করে এ বিষয়ে তাঁর সরকারের সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
ভারতের হাইকমিশনার বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভারতীয়রা বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী হতে চায়। সেই অনুসারে, ১৯৬৫ সালের আগের সংযোগ লাইন, চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল সংযোগ আগামী ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে আসন্ন ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনের সময় আরও কিছু প্রকল্পের সঙ্গে উদ্বোধন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।