ভেঙে দেয়া হয়েছে দোকান; চালাতে হবে সংসার। তাই জীবিকার প্রয়োজনে ভাঙা দোকানের মালামাল নিয়ে এখন ফুটপাতে ব্যবসায় বসেছেন রাজধানীর ফুলবাড়িয়া মার্কেটের অনেক দোকানি।
বৃহস্পতিবার ফুলবাড়িয়া মার্কেটে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। কিন্তু পুলিশের বাধার কারণে ফুটপাতেও ব্যবসা চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে দোকানিদের।
মার্কেট এলাকায় তৃতীয় দিনের মত অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। বেলা সাড়ে এগারোটায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়, চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
উচ্ছেদ অভিযানের সময় বিশৃঙ্খলা এড়াতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। মার্কেট সংলগ্ন রাস্তার দুপাশ বন্ধ করে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।
মার্কেট এলাকায় দেখা গেছে, বিভিন্ন উপায়ে দোকান থেকে এখনও মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন মালিকেরা। তারপর আশেপাশের রাস্তাগুলোতে বসে খুব কম সময়ে সেগুলা বিক্রি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
ফারুখ হোসেন নামে একজন দোকান মালিক বলেন, ‘শীতের পোশাকের দোকান ছিল আমার। এভাবে ভেঙে ফেলা হবে ভাবিনি। জীবন চালানো দায় হয়ে গেছে এই দুই দিনে। তাই আজ এসে আবার চেষ্টা করে যাচ্ছি একটু বিক্রি করা যায় কি না।’
ফারুখ জানান, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আর আগের মেয়রকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন তারা। বর্তমান মেয়র তা শুনতে চান না।
ডিএসসিসি জানিয়েছে, ফুলবাড়িয়া মার্কেটের ৯১১টি অবৈধ দোকানের মধ্যে যাদের কাছে বৈধ কাগজ আছে তারা মেয়র বরাবর আবেদন করতে পারবে। পরে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।
অনেক ব্যবসায়ীর দাবি, তারা বৈধভাবেই দোকানগুলো পেয়েছিল। ট্যাক্স দেয়ার কাগজও রয়েছে তাদের।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে, ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, ‘তারা যদি সঠিক কাগজ জমা দিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে তারা মেয়র মহোদয় বরাবর আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে সিটি করপোরেশন তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
অবৈধ দোকানের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের অভিযোগ প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে তাদের জন্য দুদুক আছে, সরকারের অন্যান্য তদন্ত দল আছে। যারা টাকা দিয়েছে তারা অভিযোগ করতে পারে তাদের বিরুদ্ধে।’
রাসেল সাবরিন জানান, প্রথম দিন আড়াইশ’র মতো অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। পরের দিন উচ্ছেদ করা হয়েছে আরও দুইশোর মতো দোকান। পর্যায়ক্রমে বাকি দোকানগুলোও উচ্ছেদ করা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ডিএসসিসি উচ্ছেদ অভিযানে গেলে দোকানিদের বাধার মুখে পড়ে কর্তৃপক্ষ। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।