বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকীর করা মামলার আবেদন খারিজ করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক সত্যব্রত শিকদার মানহানির অভিযোগ এনে করা এই মামলার আবেদনটি খারিজের আদেশ দেন।
বুধবার এ বি সিদ্দিকী সিএমএম আদালতে মামলাটি জমা দেন। এরপর মামলার আদেশ পরে হব বলে বাদীকে জানিয়েছিল আদালত।
ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যে সহযোগিতার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে ওই মামলার আবেদন করা হয়।
মামলার আবেদনে অন্য অভিযুক্তরা হলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম।
মামলার আবেদনে বলা হয়, শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘সকাল ৬টার মধ্যে শেখ হাসিনার পতন ঘটাবেন। তোমরা সেভাবে কাজ চালিয়ে যাও।’
স্বাধীনতার পর থেকেই এই উগ্রপন্থি স্বাধীনতাবিরোধীরা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয়প্রতিপন্ন করছে।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যকলাপ ও সংঘাত তৈরি করা হয়েছে বলেও এতে অভিযোগ করেন এ বি সিদ্দিকী।
এ বি সিদ্দিকী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জবানবন্দি দিয়ে এসেছি, তবে এ বিষয়ে আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলব না। মৌলবাদীদের কথায় সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে যদি ভাস্কর্য সরানো না হতো, তাহলে আজ তারা এই স্পর্ধা দেখাতে পারত না। তাই আজ আমাকে এই মামলাটি করতে হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই ক্ষুব্ধ।’
গত শুক্রবার কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের জেরে সোমবার বাবুনগরী, মামুনুল ও ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন গ্রহণ করে আদালত। মামলার তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়া হয়।
ওই দিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও আইনজীবী আবদুল মালেক বাদী হয়ে মামুনুলদের বিরুদ্ধে দুটি মামলার আবেদন করেন। এর মধ্যে আবদুল মালেকের মামলাটিতে শুধু মামুনুলকে আসামি করা হয়।
মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার সকালে বাদীর জবানবন্দি নেয়ার পর দুপুরে মামলার আবেদন গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন।
সোমবার করা দুই মামলার একটির আবেদনে বলা হয়, কিছুদিন আগে মৌলবাদী অপশক্তি মামুনুল হক ও ফয়জুল করিম কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। এটি দেশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ।