হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির নুরুল ইসলাম দাবি করেছেন, ইসলাম ভাস্কর্য নির্মাণ অনুমোদন না করলেও ক্ষেত্র বিশেষে ছবি তোলাকে বৈধ করেছে।
ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যুতে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত নেতা প্রশ্নের মুখে পড়েন তাদের ছবি তোলা ও ভিডিও করার প্রবণতা নিয়ে।
বাংলাদেশে কয়েক দশক আগেও কওমি আলেমরা ছবি তোলাকে হারাম বলতেন। তবে এখন এটা আর বলেন না। দলীয় কর্মসূচিতে, ঘরোয়া আয়োজনে, ঘুরতে গিয়েও ছবি তোলে ফেসবুকেও পোস্ট করেন। আবার ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে ছাড়া হচ্ছে, যদিও ২০১৩ সালে ঢাকা অবরোধর সময় হেফাজত নেতারা ইন্টারনেটে ভিডিও পোস্ট করা নিয়ে নানা বক্তব্য করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে আবার দাবি করা হয় ইসলামে প্রাণীর ভাস্কর্য অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এর বাইরে অন্য কোনো কারণ নেই।
এ সময় এক জন সাংবাদিক জানতে চান, আপনারা বলেন ভাস্কর্য শরিয়াবিরোধী। কিন্তু আপনারা ছবি তোলেন, ভিডিও দেন-সেটা শরিয়াবিরোধী না?
এমন প্রশ্নে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাস্কর্য আর ছবি এক না। আমরা পাসপোর্টের সময় ছবি তুলি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইসলামে এটা বলা হয়েছে যে তোলা যাবে। তবে ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে তা বলা হয়নি।’
বাংলাদেশে ফতোয়া দেয়া অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়টি স্মরণ করিয়ে দিলে নুরুল ইসলাম দাবি করেন, এই রায় পরে সংশোধন করা হয়েছে এবং সেখানে ফতোয়া দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
ভাস্কর্য ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার যে প্রসঙ্গ টানা হয়েছিল, সেটা কোন পর্যায়ে আছে- জানতে চাইলে কাসেমী জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ভাস্কর্যের বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তারা আশা করছেন শিগগির আলোচনায় বসা যাবে।
হেফাজত নেতাদের পক্ষ থেকে আক্রমণাত্মক বক্তব্য আসার বিষয়ে এক প্রশ্নে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ রকম আক্রমণাত্মক কথা বলি না। আমরা চেষ্টা করি সব সময় শান্তভাবে কথা বলার।’
যদিও তাকে প্রশ্ন করার সময় একটু উত্তেজিত হতে দেখা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হক উপস্থিত থাকলেও তিনি মূল মঞ্চের বাইরে বসেছিলেন এবং চুপ থাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত নেতার নির্মাণ ইস্যুতে হেফাজত ও সমমনা কওমি আলেমরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাহফিলের অনুমতি পাচ্ছেন না জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ জানান নুরুল ইসলাম।
শীতকালীন ওয়াজ কওমি আলেমদের আয়ের একটি বড় উৎস। তবে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে একাধিক জেলায় মামুনুল হক, ছাড়াও চরমোনাইয়ের পীরের মাহফিলের অনুমতি বাতিল হওয়ায় তারা সে আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নানা অজুহাতে এই সকল আয়োজনে বাধা দেয়া হচ্ছে। আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে নির্বিঘ্নে ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের পথে ইসলামবিদ্বেষী প্রশাসনিক বাধা-বিপত্তিসমূহ তুলে নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
দাবি পূরণ না হলে রাজপথে নামার হুমকিও দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।