বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শহিদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের ৫০তম অন্তর্ধান দিবস আজ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৩:২৩

১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর আল বদর ও রাজাকার বাহিনীর বর্বররা তাকে তার চামেলীবাগের ভাড়া বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়

শহিদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ৫০তম অন্তর্ধান দিবস আজ ১০ ডিসেম্বর।

স্বাধীনতার প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর আল বদর ও রাজাকার বাহিনীর বর্বররা তাকে তার চামেলীবাগের ভাড়া বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশার প্রথম শিকার হন সিরাজুদ্দীন হোসেন।

শহিদ সিরাজুদ্দীন হোসেন ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী ও বার্তা সম্পাদক। ব্রিটিশ আমলের শেষভাগ থেকে শুরু করে তার সাংবাদিকতা জীবন স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত ব্যাপ্ত। এই পুরো সময়কালে দেশের সকল আন্দোলনের সঙ্গে তার ছিল সরাসরি যোগাযোগ।

তিনি তার ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে এ দেশের বঞ্চিত মানুষের কথা অসাধারণ দক্ষতায় সংবাদপত্রের পাতায় ফুটিয়ে তুলেছেন।

১৯৬৬ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলীয় সম্মেলনে যোগদানের আগে শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু সিরাজুদ্দীন হোসেনের হাতে এই সংক্রান্ত দলিলের কপি দিয়ে যান এবং তাঁর পক্ষে প্রচারণা চালাতে অনুরোধ করেন। সিরাজুদ্দীন হোসেন সেই অনুরোধ রেখেছিলেন। 

১৯৭১ সালে অবরুদ্ধ এই দেশে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে সাংবাদিকতা করে গেছেন। সে সময় তার লেখা ‘ঠগ বাছিতে গাঁ উজাড়’, ‘ অধূনা রাজনীতির কয়েকটি অধ্যায়’ ধরনের উপ-সম্পাদকীয় এবং ‘এতদিনে’ শিরোনামে সম্পাদকীয় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে তার দৃঢ় অবস্থানের সাক্ষ্য দেয়।

তিনি প্রবাসী সরকারের কাছে পূর্ব পাকিস্তানের আমেরিকান কনস্যুলেটের গোপন রিপোর্টটি পাঠিয়েছিলেন, যা পরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বার বার প্রচারিত হওয়ার পর বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে উঠতে সাহায্য করে।

১৯৫২ সালে দৈনিক আজাদের বার্তা সম্পাদক থাকা অবস্থায় মহান ভাষা আন্দোলনের পক্ষে তার সাংবাদিকতা বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে তার অসাধারণ কীর্তি বলে পরিগণিত।

শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের অসাধারণ হেডিং বাঙালি জাতির রক্তে আগুন ধরিয়ে দিত। ‘চিনিল কেমনে’,  ‘সুকুইজ্জা কডে’, ‘জয় বাংলার’ জয়, ‘বিক্ষুব্ধ নগরীর ভয়াল গর্জন’ এবং দুই পাকিস্তানের ভারসাম্যহীনতাকে সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করে যে হেডিং করেছেন, তা পাঠককে বিষয়ের গভীরে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা প্রস্তাব পেশ করলে তা বাংলার মুক্তিসনদ হিসেবে মানুষের মনে প্রোথিত করার জন্য অক্লান্ত কাজ করে গেছেন সিরাজুদ্দীন হোসেন। সরকারের রোষানলে পড়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ইত্তেফাকে ছয় দফার পক্ষে তুলনাহীন সাংবাদিকতা করেছেন তিনি। সত্তরের নির্বাচনের সময় নানা বিরুদ্ধ স্রোতের স্বরূপ উন্মোচন করা ও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে অনবদ্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন সিরাজুদ্দীন হোসেন। মিশন জার্নালিজমের সবচেয়ে ফলদায়ক রূপ দেখা গেছে তাঁর সাংবাদিকতায়। 

শহিদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ৫০তম অন্তর্ধান দিবসে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান সম্পর্কে নুতন প্রজন্মকে জানাবার জন্য বি-বার্তা টিভি চ্যানেল এবং শহিদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন স্মৃতি পরিষদ যৌথভাবে “সিরাজুদ্দীন হোসেনঃ ইতিহাসের অনুঘটক” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

অনুষ্ঠানে মুল আলোচক থাকবেন ড. মোস্তফা সারওয়ার, ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং সাবেক উপ-উপাচার্য, ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিয়েন্স এবং বর্তমান ডিন ও সাবেক উপাচার্য ডেলগাডো কমিউনিটি কলেজ, যুক্তরাষ্ট্র। অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়।

যশোরের খাজুরা উপজেলায় শহিদ সিরাজুদ্দীন হোসেন সরকারী কলেজ কর্তৃপক্ষ আগামী ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় কলেজ প্রাঙ্গনে সিরাজুদ্দীন হোসেন স্মরণে মিলাদ মাহফিল এবং আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

সিরাজুদ্দীন হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরে মসজিদে কোরানখানি এবং মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। চলমান করোনা দুর্যোগের কারণে এবার তার বাসভবনে কোনো অনুষ্ঠান রাখা হয়নি। পারিবারিকভাবে শহিদ সিরাজুদ্দীন হোসেনকে স্মরণ ও তার আত্মার শান্তির জন্য দোয়া করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর