ভাস্কর্য নিয়ে বক্তব্য ‘স্পষ্ট’ করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, ‘আপনারা তো জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য সারা বাংলাদেশে বানিয়েছেন। আপনারা আপনাদের বক্তব্য স্পষ্ট করুন। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আপনারা বক্তব্য দিন, এটা করতে আপনাদের এত লজ্জা কেন?’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ভাস্কর্য নিয়ে তার অবস্থান কী। তিনি নির্লজ্জের মতো বলেন, ‘এটি আমার কাছে কোনো ইস্যু নয়।’ সারা দেশ উত্তাল আর উনার কাছে ইস্যু না। উনার ইস্যু হচ্ছে তারেক রহমানের মতো যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কীভাবে দেশে ফেরত আনা যায়, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তি কীভাবে করা যায়।”
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যথা, পায়ের ব্যথা উনার কাছে ইস্যু। আমি ফখরুল সাহেবের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, বক্তব্যের মাধ্যমে আপনাদের অবস্থান পরিষ্কার করুন। অন্যথায় অপশক্তির পেছনে ইন্ধনদাতা হিসেবে জনগণ আপনাদের চিহ্নিত করবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির পরবর্তী প্রজন্ম দেশ এগিয়ে যাক, তা চায় না। ১৯৭১ সালে তারা ফতোয়া দিয়েছিল ‘মুক্তিযোদ্ধারা সব কাফের’, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করা ঈমানের বরখেলাপ’। এমনকি এ ফতোয়াও দেয়া হয়েছিল, ‘আমাদের মা-বোনরা গণিমতের মাল, তাদের ভোগ করা যাবে’।”
তিনি বলেন, ‘যারা সেসব ফতোয়া দিয়েছিল, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম হচ্ছে আজকের ভাস্কর্যবিরোধীরা। যারা ফতোয়া দিয়েছিল, তাদের অনুসারীরা ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়ে একটি শ্রেণিকে উসকে দিচ্ছে, ভাস্কর্য ভাঙচুর করছে।’
ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘এ দেশে ভাস্কর্য হাজার বছর ধরে আছে। ব্রিটিশ আমলে ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যকে ধারণ করার স্বার্থে ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। তখন কেউ কথা বলেনি। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যখন নির্মিত হচ্ছে, তখন তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে।
‘এটি রহস্যজনক। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে তারা কথা বলে, আবার গ্রহণযোগ্যতা আদায়ের জন্য বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দুই চার কথা বলার চেষ্টা করে। এগুলো হচ্ছে ছলচাতুরি। এটি হচ্ছে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অপকৌশলের অংশ।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব শাবান মাহমুদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা অরুণ সরকার রানা।