পূর্বানুমতি না থাকায় ছয় চিনিকল বন্ধের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। সেখানে কর্মসূচি পণ্ড হলেও পরে শ্রম ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছেন নেতা-কর্মীরা।
লোকসানের কারণে সম্প্রতি ছয়টি চিনিকল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন-বিএসএফআইসি। যদিও এই সিদ্ধান্তে ছয়টি কলের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি যাবে না। কৃষকের সব আখও কিনে নেবে সরকার।
সরকারি আরও নয়টি চিনিকল আছে, সেখানে পাঠানো হবে বন্ধ কারখানার কর্মীদের। আখও যাবে সেখানে। আর বন্ধ করা চিনিকলগুলো আধুনিকায়ন করে পরে আবার চালু করা হবে।
তবে কারখানা বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীকে বেকার করার অভিযোগ এনে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ডাক দেয় শ্রমিক দল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। উপস্থিত ছিলেন দফতরের দায়িত্বে থাকা এমরান সালেহ প্রিন্সও।
তবে অনুমতি না থাকায় বাধা দেয় পুলিশ। এ কারণে গয়েশ্বর আসার আগেই নেতা-কর্মীরা সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়।
সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজপথে কর্মসূচি পালন করতে পূর্বানুমতির বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়।
এ সময় বিএনপি নেতা এমরান সালেহ প্রিন্স কর্তব্যরত পুলিশের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তবে পুলিশের চাপে মানববন্ধনে দাঁড়াতে পারেননি।
পরে পুলিশি বাধার প্রতিবাদে প্রেসক্লাব থেকে শ্রমভবন পর্যন্ত পদযাত্রা করেন নেতা-কর্মীরা। শ্রম ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে পাঁচ মিনিটের বক্তব্যও দেন নেতারা।
মানববন্ধন করতে না দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রমনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসি (পেট্রোল) ইত্তেখারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার নিজস্ব কোনো বক্তব্য নাই। উপরের নির্দেশ ফলো করেছি শুধু।’
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছেন তাও এই বিজয়ের মাসে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল শ্রমিক দল পুলিশের সংশ্লিষ্ট দফতরে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সে চিঠির কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। অথচ এ সময়ে এসে বাধা ঠিকই দিতে পারছেন।’
প্রিন্স বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী পুলিশকে দিয়ে শ্রমিক দলের আয়োজনে এই মানববন্ধন বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ এই সরকার জনবান্ধব নয়, শ্রমিকবান্ধব নয়। উল্টো শ্রমিকদের যে কল-কারখানা আছে সেগুলো লুটপাট করে খেয়ে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে দিয়ে তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বেকার হয়ে গেল হাজার হাজার শ্রমিকরা৷ অন্যদিকে লক্ষ লক্ষ আখচাষিরা হতাশায় আছেন। অনেক আখ রয়েছে তাদের জমিতে, সেই আখ কী করবে সেটা ভাবতে ভাবতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।’