বলাৎকারের বিরুদ্ধে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতারা সরব দাবি করে চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, এই অপবাদ কেন তাদের দেয়া হচ্ছে?
রাজধানীর পল্টনে দলের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে যেভাবে সোচ্চার হয়েছেন, বলাৎকারের বিরুদ্ধে তাদের তেমন কথা বলতে দেখা যায় না।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমরা তো এটার প্রতিবাদ করি। যারা সমকামী আইন পাস করার জন্য উত্থাপন করেছে, আমরা তাদের বিরোধিতা করেছি।’
এ সময় পাল্টা প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আজকে দেখেন- হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র মাধ্যমে এটা (বলাৎকার) গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা তারা করছে। কাজেই এই অপবাদ তো তাদের উপরে আসবে। আমাদের উপরে কেন আসবে?’
রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করছে ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক বেশ কয়েকটি দল। এ ইস্যুতে সামনে এসেছে বলাৎকারের বিষয়টি, যার বেশিরভাগ অভিযোগ পাওয়া যায় ধর্মভিত্তিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলো থেকে।
ভাস্কর্যবিরোধীদের শাস্তির দাবিতে সক্রিয় সংগঠন ও ব্যক্তিরা মাদ্রাসায় বলাৎকারের প্রসঙ্গটি সামনে এনে প্রশ্ন তুলছেন, এগুলো ইসলাম সম্মত কি না?
‘ভাস্কর্য নিয়ে ভাবতে হবে না, বলাৎকার বন্ধ করুন’
সম্প্রতি এক দলীয় সভায় ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘ভাস্কর্য নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই, আগে নিজেদের চরিত্র ঠিক করেন। বিভিন্ন মাদ্রাসায় যেভাবে শিশু বলাৎকার হচ্ছে, আগে সেটি বন্ধ করেন।’
‘যৌন নির্যাতনে মৌলভী সাহেবদের সম্মান কমছে’বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীও।
এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান নিয়ে চরমোনাই পীর রেজাউল করীম বলেন ‘এটাকে (বলাৎকার) আমরা সব সময় হারাম বলতেছি, নাজায়েজ বলতেছি। আমি মনে করি, দেশ যেহেতু নষ্ট হয়ে গেছে, ধ্বংস হয়ে গেছে, কাজেই…’
সংবাদ সম্মেলনে ভাস্কর্য ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম জানান, কয়েকটি মসজিদ-মাদ্রাসার মোহনায় পড়ার কারণেই ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করা হয়েছিল।
ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার অভিযোগে ঢাকার মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে দুটি মামলাও হয়েছে।
এর মধ্যে একটি মামলায় হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের পাশাপাশি আসামি করা হয়েছে ফয়জুল করীমকেও, যিনি চরমোনাই পীর খ্যাত রেজাউল করীমের ভাই।
এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেন রেজাউল করীম।