রাজধানীতে গণপরিবহনে অরাজকতা বন্ধে বাস অল্প কয়েকটি কোম্পানির অধীনে আনার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে বহুদিন ধরে। এবার তা আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে রুটভিত্তিক কোম্পানির অধীনে বাস চলাচল শুরু হবে। এদিন কেরানিগঞ্জের ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রুট দিয়ে শুরু হচ্ছে পাইলট উদ্যোগ।
এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হচ্ছে ‘বাস রুট ফ্রাঞ্চাইজি পাইলটিং’।
মঙ্গলবার সকালে 'বাস রুট রেশনালাইজেশন' কমিটির ১৪তম সভা শেষে এটি জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
রাজধানীতে এখন মোট ২৯১টি রুটে প্রায় ৩০ হাজার বাস চলে। পুরো পরিকল্পনা অনুযায়ী রুট ৪২টিতে নামিয়ে আনা হবে। নয়টি ক্লাস্টারে ২২টি কোম্পানি চালাবে এসব বাস। বাসের সংখ্যা কমিয়ে করা হবে ৯ হাজার ২৭টি।
মঙ্গলবারের সভা শেষে সাংবাদিকদের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘যে প্রস্তাব বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এসেছে, সেটি আমরা চূড়ান্ত করেছি। আমরা দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছি। এখন থেকে যে যার দায়িত্ব পালন করবে। সব কিছুই ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করা হবে।’
এর আগে, ২০১৬ সালের শুরুতে ছয়টি কোম্পানির অধীনে ছয় রঙের বাস নামানোর উদ্যোগ নেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। দেড় বছরের মধ্যে নতুন তিন হাজার বাস নামানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
তবে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যুর পর থেমে যায় প্রকল্প।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে রাজধানীতে রুটভিত্তিক কোম্পানির অধীনে বাস চলাচল শুরু হবে। ছবি: সাইফুল ইসলাম
সম্প্রতি দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে নভেম্বরে মাঝামাঝিতে বাস মালিক, ঢাকা মহানগর পুলিশ ও নগর পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল হক।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) জানায়, বিদ্যমান বাসগুলো মূল্যায়নের মাধ্যমে কোম্পানিভিত্তিক মালিকানার ভাগ নির্ধারণ করা হবে।
এসব বাস ও মিনিবাস নষ্ট হয়ে গেলে মালিককে ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার। এ ছাড়া নতুন বাস সংগ্রহের জন্য ৪-৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হবে।
দুই থেকে তিনটি রুটকে কমিয়ে একটি করার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। নতুন রুটে কোনো ওভারল্যাপিং থাকবে না।
যেসব রুটে কোনো মালিকের ৫০০-এর বেশি গাড়ি আছে, ওই রুটে তিনিই কোম্পানির নেতৃত্বে থাকবেন। কোম্পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য থাকবে রেগুলেটরি বোর্ড।
১ এপ্রিল চালু হওয়া রুটে কয়টি বাস কোম্পানি থাকছে এমন প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ‘মূলত পাঁচটি কোম্পানি আছে এখানে। এই রুটে ১৬৫টি বাস আছে, আমরা প্রাথমিকভাবে এমন তথ্য পেয়েছি। সেই তথ্য আমরা আদান প্রদান করেছি।’
সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এই সভায় উপস্থিত ছিলেন দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা, বাস মালিক সমিতির সভাপতি, বিআরটিসির চেয়ারম্যানসহ কমিটি অন্যান্য সদস্যরা।