ভাস্কর্যকে ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতির অংশ বলে মন্তব্য করেছেন প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আবদুল্লাহ আলী আলহামৌদি।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত।
কিছু ধর্মভিত্তিক দল যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতায় একাট্টা তখন মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটির পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য আসলো।
বাংলাদেশে চলমান ভাস্কর্য বিরোধীতার প্রসঙ্গ নিয়ে জানতে চাইলে, হেসে ওঠেন আরব আমিরাতের দূত। বলেন, ‘শতবছর ধরে আমাদের দেশেও ভাস্কর্য আছে। ভাস্কর্য ইতিহাস আর সংস্কৃতির অংশ।’
এদিন সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভাস্কর্য নিয়ে একই রকম মন্তব্য করেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরানও।
তিনি বলেন, ‘ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে তুরস্ক জুড়ে অনেক ভাস্কর্য রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে তুরস্কে কোনো ভিন্নমত কিংবা বিতর্ক নেই।’
এর আগেও ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে কথা বলেন তুর্কি দূত। দুই ডিসেম্বর তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকে জানান, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এরদোয়ান সরকারের অর্থায়নে নির্মিত হবে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য।
তুরস্ক সরকারের অর্থায়নে ঢাকায়ও নির্মিত হবে আধুনিক তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য।
মুসলিম বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশটির এমন সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছিল জামায়াতে ইসলামী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধী করা দলটির আমির শফিকুর রহমান তুরস্ককে ভাস্কর্যটি নির্মাণ না করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন।
জামাতের আহ্বান কানে নিচ্ছে না তুরস্ক। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাতকারে দেশটির রাষ্ট্রদূত জানান, ২০১৮ সালে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তুরস্কের আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এবং ঢাকায় কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের নেতা।
ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ফয়জুল করিমকে।