ব্যবসায়ীদের বাধা উপেক্ষা করে উচ্ছেদ অভিযান চলছে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার মার্কেটে।
বেলা সাড়ে ১১টায় উচ্ছেদ অভিযান শুরুর কথা থাকলেও দুপুর ১টা পর্যন্ত সে কাজ শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বুলডোজার ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২-এর অবৈধ স্থাপনা ভাঙা শুরু করে। এ সময় ব্যবসায়ীরা বুলডোজারের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যদের টিয়ার শেল ছুড়তে দেখা যায়।
এর আগে রাজধানীর গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেটের নকশা বহির্ভূত নয় শতাধিক দোকান উচ্ছেদে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।
রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে হামলা। ছবি: সাইফুল ইসলাম
ফুলবাড়িয়া সুপারমার্কেট-২ এর ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ ব্লকের (সিটি প্লাজা, নগর প্লাজা ও জাকের প্লাজা) দোকানগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর কথা ছিল।
ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ তিন মাস আগে নোটিশ দিয়ে বিষয়টি দোকান মালিকদের জানিয়ে দিয়েছিল। মালামাল সরিয়ে নিতে সোমবার মাইকিংও করা হয়।
কিন্তু দোকান মালিক ও কর্মচারীদের বাধার মুখে মার্কেটের কাছেই যেতে পারেনি ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান, এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ ও তানজিলা কবির ত্রপা।
রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে হামলা, পুলিশের টিয়ারশেল। ছবি: সাইফুল ইসলামরাস্তা আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
চকবাজার সার্কেলের সহকারী পুলিশ কমিশনার ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘আমরা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে আছি, কিন্তু মার্কেটের বর্ধিত অংশে যেসব অবৈধ দোকান আছে তার মালিকরা উচ্ছেদ কার্যক্রমে বাধা দেয়। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের তত্বাবধানে উচ্ছেদ শুরু হলে তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
‘তাদের ছত্রভঙ্গ করতে আমরা কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করি। এখন পরিস্থিতি শান্ত। সিটি করপোরেশন সুষ্ঠুভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে।’
দোকান মালিকদের অভিযোগ, সাঈদ খোকন মেয়র থাকার সময় ফুলবাড়িয়া মার্কেটের ৯১১টি দোকানের প্রত্যেকটির জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দেয়া হয় ডিএসসিসিকে।
এ বিষয়ে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মামুন নিউজবাংলাকে জানান, উচ্ছেদের ব্যাপারে কিছু জানা নেই তার।
রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে হামলা। ছবি: সাইফুল ইসলাম
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ীদের পক্ষে। তারা বৈধভাবে ব্যবসা করে খাক, এটাই আমি চাই।
‘এখানকার দোকানের মালিকেরা প্রতি দোকান বাবদ সাত থেকে ১২ লাখ করে টাকা সিটি করপোরেশনকে দিয়েছেন। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কাছে এই টাকার কোনো হিসাব নেই।’
বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হতে পারে বলেও জানান কাউন্সিলর মামুন।