বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিন মাস নিস্তব্ধ ধোলাইপাড়ের সেই সড়কদ্বীপ

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৮:১১

‘ঢাকা-মাওয়া রাস্তা বানানোর সময় ধোলাইপাড় মোড়ে গোল কইরা ভাস্কর্য বসানোর জায়গাটা বানাইছে। এর পরে প্রায় তিন মাস আগে এইহানে টিন দিয়া ঘেরাও দিছে। তয় তিন মাস ধইরা এইহানে কোনো কাজ হয় না।’

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ হবে যে সড়কদ্বীপে, সেখানে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কাজ হয়েছে শুধু ভাস্কর্যের বেদিটুকুই।

জায়গাটি টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা। ভেতরে নির্মাণস্থল বাইরে থেকে দেখা যায় না। বেড়ার চার পাশ দিয়ে তেলের ড্রাম বসিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে কোনো যানবাহন বেড়ার গায়ে আঘাত হানতে না পারে।

হানিফ ফ্লাইওভারের যে র‌্যাম্পটি মাওয়া সড়কের দিকে নেমে এসেছে, সেখান থেকে গজ পঞ্চাশেক সামনে, মির হাজারীবাগ রোড ও যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা রোড যেখানে এসে মিলেছে, সেই মোড়ে এ ভাস্কর্যটি বসানো হচ্ছে।

সোমবার দুপুরে ধোলাইপাড়ের সেই জায়গাটি ঘুরে দেখেন এ প্রতিবেদক। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় তিন মাস ধরে সেখানে দৃশ্যমান কোনো কাজ হচ্ছে না। শুধু জায়গাটা ঘিরে রাখা হয়েছে।

ঘিরে রাখা জায়গাটির পাশেই সড়কের এক পাশে ফলের দোকানের মালিক জহির ইসলাম। ভাস্কর্য নির্মাণে দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতির কথা জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা-মাওয়া রাস্তা বানানোর সময় ধোলাইপাড় মোড়ে গোল কইরা ভাস্কর্য বসানোর জায়গাটা বানাইছে। এর পরে প্রায় তিন মাস আগে এইহানে টিন দিয়া ঘেরাও দিছে। তয় তিন মাস ধইরা এইহানে কোনো কাজ হয় না। মাঝে মাঝে আর্মির লোকেরা আইসা দেইখা যায়।’ 

লম্বায় ৬০ থেকে ৭০ ফুট ও প্রস্থে ২০ ফুটের মতো ঘেরা জয়গাটির ওপরে মোটা কাপড়ের শামিয়ানা টানানো।

ঘের দেয়ায় ঢাকা-মাওয়া ব্যস্ত সড়কটি এখানে সংকীর্ণ হয়ে এসেছে। কয়েকটি সড়কের মিলনস্থল হওয়ায় এখানে যানবাহনের চাপ সবসময় লেগে থাকে।

গত সপ্তাহ তিনেক ধরে এই জায়গাটুকু সারা দেশের মনোযোগের কেন্দ্রে চলে এসেছে। কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা এখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছেন। তারা এটি প্রতিরোধের ডাকও দিয়েছেন। 

ভাস্কর্য নির্মাণের স্থান প্রহরার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মী মো. রাশেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি প্রায় ২০ দিন এখানে আছি। এই সময়ের মধ্যে কোনো কাজ হইতে দেখি নাই। চতুরদিকে ঘেরাও করে রাখা হইছে। এর ভেতরে আমি দিনে পাহারা দেই, আরেকজন পাহারা দেয় রাতে। শুনছি প্রায় তিন মাস ধরে ঘেরাও করে রাখা হইছে।’

কাজ শুরুর কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাজ তো শুরুই হয় নাই। কাজ কবে থেকে শুরু হবে সেটাও জানি না। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

এই ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যুতে দেশের ঝিমিয়ে পড়া রাজনৈতিক অঙ্গণে চাঙ্গা হয়েছে। ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল এটি নির্মাণ ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে সোচ্চার হওয়ার পর ক্ষমতাসীন দল ও তার সমর্থন সংগঠনগুলো শুরুতে নীরব থাকলেও এক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে মাঠে নামে।

জেলায় জেলায় উপজেলায় উপজেলায় ব্যাপক লোক সমাগম করে ভাস্কর্য নির্মাণের পক্ষে অবস্থান ঘোষণা করার পর শুরুতে উত্তেজিত বক্তব্য দেয়া ধর্মভিত্তিক দলগুলোর নেতাদের বক্তব্য এখন নমনীয় হয়েছেন। তারা বলছেন, সরকারের সঙ্গে ‘যুদ্ধে যাবেন না’।

যদিও এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন একটি ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

এই ঘটনায় ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর