রাজধানীতে একটি ধর্ষণ মামলায় বাদী ও আসামিপক্ষের আপস হলেও বিচারক তা না মেনে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বনানীতে ১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণের দায়ে আসামিকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। টাকা না দিলে আরও ছয় মাস থাকতে হবে কারাগারে।
সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার এই রায় দেন।
ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালের ১ আগস্ট। মামলার বিচার চলাকালে মেয়েটির বাবা-মায়ের সঙ্গে আপসে আসেন আসামি। সিদ্ধান্ত হয়, মামলা আর চলবে না।
তবে বিচারক কামরুন্নাহার বলেন, ‘যদিও মামলাটি আপস হয়েছিল। কিন্তু জঘন্যতম ঘটনাটির জন্য নজির থাকা দরকার।’
মেয়েটির বাবা আদালতে এসে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। পরে বিচারক তাকে ভর্ৎসনা করেন।
দণ্ডিত ব্যক্তি পেশায় ভ্যানচালক। বন্ধুর মেয়েকে ধর্ষণ করেছিলেন তিনি। ওই বন্ধুও পেশায় ভ্যানচালক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ নিউজবাংলাকে জানান, ২০১৭ সালের ১ আগস্ট ধর্ষণের এই ঘটনা ঘটে। সেদিন শিশুটির বাবা ভ্যান নিয়ে বের হয়েছিলেন। তার মা গৃহশ্রমিক। তিনিও কাজে গিয়েছিলেন।
মেয়েটি মাদ্রাসায় পড়ত। সেদিন বাড়ি ফিরে গৃহস্থালির কাজ করছিল৷
সবুজ মিয়া মেয়েটির বাবার সঙ্গে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে ঘরে শুয়েছিলেন। মেয়েটিকে একা পেয়ে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করেন। পরে হুমকি দেন, এ ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে ও তার বাবা-মাকে মেরে ফেলবেন।
সবুজ চলে যাওয়ার পর মেয়েটি কাঁদতে থাকলে প্রতিবেশী এক নারী তাকে জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছে। মেয়েটি সব খুলে বললে সবুজকে আটক করে পিটুনি দেয় প্রতিবেশীরা।
মেয়েটির মা-বাবা বাড়ি ফিরলে সবুজকে পুলিশে দেয়া হয়। পরদিন তার মা বনানী থানায় মামলা করেন৷
ঘটনা তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ বনানী থানার উপপরিদর্শক আশরাফুল আলম একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
এই মামলায় সাতজন আদালতে সাক্ষ্য দেন।