বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ির মধ্যকার ট্রেন চলাচল ১৭ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
রোববার সকালে সপ্তাহব্যাপী রেলসেবা ও নিরাপত্তা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন ও যাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো.শামসুজ্জামান, রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন সরদার শাহাদত আলীসহ অন্য কর্মকর্তারা।
মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৭ ডিসেম্বর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলসেবা উদ্বোধন করবেন। এ পথ দিয়ে শুরুতে পণ্যবাহী ট্রেন চলবে।
তিনি রেলের জন্য ডাবল লাইন না হলে শিডিউল বিপর্যয় কমানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রেলের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু লাইনের সংখ্যা আগের মতোই আছে৷ আমরা যদি ডাবল লাইন না করতে পারি তবে শিডিউল বিপর্যয় কমানো যাবে না।
‘শুধু যাত্রীসেবার কথা চিন্তা করে রেলের সংখ্যা বাড়ালেও রেলের লাইন যদি ডাবল না হয়, তাহলে যাত্রীসেবা হবে না। শিডিউল বিপর্যয় থেকে যাবে।’
মন্ত্রী প্ল্যাটফর্ম উঁচু করার কথা জানিয়ে বলেন, আস্তে আস্তে দেশের সবগুলো প্ল্যাটফর্ম উঁচু করা যাবে যাতে যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে কোনো সমস্যা না হয়।
‘বিমানবন্দর রেল স্টেশনে আমরা প্ল্যাটফর্ম উঁচু করেছি। আমরা আস্তে আস্তে কমলাপুর স্টেশন মিটারগেজ ট্রেনের সমান উঁচু করব।’
রেলের সেবা আগের তুলনায় আরও ভালো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন অনেকেই রেলসেবার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। আগের চেয়ে রেলে এখন যাত্রী বেড়েছে। আমরা যাত্রীসেবার কথা মাথায় রেখে রেলের সব ধরনের উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
রেলমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘সারা দেশে সড়কে যে হারে উন্নয়ন হয়েছে, রেল সেই উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি। ২০১১ সালের আগ পর্যন্ত রেলে কোনো ধারাবাহিক বিনিয়োগ ছিল না। এখন আস্তে আস্তে রেলে বিনিয়োগ শুরু হয়েছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি এ সময় রেলসেবা ও নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
রেলসেবা সপ্তাহের কার্যক্রম
সুজন জানান, রেলসেবা ও নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে যেসব কার্যক্রম চলবে, সেগুলো হলো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের চকলেট ও ফুলেল শুভেচ্ছা দেয়া, করোনার সময়ে স্বাস্থ্যসুরক্ষার মাধ্যমে নিরাপদ ট্রেন চলাচল নিশ্চিতকরণ, রেলওয়ের হাসপাতাল সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া, রেলওয়ে স্টেশন ও স্টেশন অঙ্গন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, ট্রেনগুলোর সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করা, যাত্রীদের নিরাপত্তা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এ ছাড়াও রয়েছে স্টেশনের ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা আপডেট রাখা, প্ল্যাটফর্ম, প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জ, ওয়েটিং রুম, রিটায়ারিং রুম ও টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, ট্রেনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, যাত্রী অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া, যাত্রীদের প্রতি সৌজন্যমূলক আচরণ প্রদর্শন, সব কর্মচারীর কর্মস্থলে সঠিক সময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করা।