পৃথিবীর সব মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে, এই যুক্তি মানতে রাজি নন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকারীরা।
বিরোধিতাকারীদের একজন বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েব এরদোয়ান বা মক্কা শরিফের ইমামও যদি ভাস্কর্য উদ্বোধন করতে আসেন তাহলেও তারা সেটা মানবেন না।
রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যুতে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় বৈঠকে বসেন কওমি আলেমরা। বৈঠক শেষে এই মাদ্রাসার হাদিসের শিক্ষক মুফতি নিয়ামত উল্লাহ ফরিদী কথা বলেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।
ইসলামী দলগুলোর একটি অংশ যখন ভাস্কর্যকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তখন তুরস্কে এরদোয়ান সরকার তাদের অর্থায়নে তার দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। তাদের অর্থে বাংলাদেশে হবে আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য।
ইউরেশিয়ায় মুসলিম এই দেশটির প্রভাব রয়েছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে। ইসলামি শাসন ব্যবস্থা খিলাফত শেষ অবধি কায়েম ছিল সে দেশেই।
তুরস্কে ভাস্কর্য রয়েছে অসংখ্য, এমনকি মসজিদের সামনেও রয়েছে।
তুরস্কের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ছিল মুফতি নিয়ামত উল্লাহ ফরিদীর কাছে। তিনি বলেন, ‘তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কেন, কাবা শরিফের কোনো ইমামও যদি কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য উদ্বোধন করে সেটাও পৃথিবীর কোনো মুসলমান মেনে নেবে না।
দেশে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর একটি অংশ যখন ভাস্কর্যকে ইসলামবিরোধী বলে এর বিরোধিতা করছে, তখন সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি মাওলানা জিয়াউল হক এদেরকে ভ্রান্ত বলেছেন। তিনি কোরআনের আয়াত উল্লেখ করেই বলেছেন, ইসলাম ভাস্কর্য অনুমোদন করে।
পাকিস্তান, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ইরাক, ইরান আর জনসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ায় অসংখ্য ভাস্কর্য থাকার বিষয়টি জানিয়ে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, যদি অবৈধই হবে, তাহলে এসব দেশে কেন ভাস্কর্য করা হয়েছে।
এই প্রশ্ন ছিল মুফতি নিয়ামত উল্লাহ ফরিদের কাছেও। জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বের মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে ভাস্কর্য আছে-এ কথা বলে লাভ নেই।
নিয়ামত বলেন, ‘মূর্তি-ভাস্কর্য একই জিনিস। আপনারা বাংলা একাডেমির অভিধানেও একই অর্থ পাবেন। অন্য মুসলিম দেশে ভাস্কর্য থাকলে তা কোরআনকে অগ্রাহ্য করে হচ্ছে।’