কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, ম্যুরালের নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে শহর ও নগরের গুরুত্বপূর্ণ সব ভাস্কর্য।কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় জেলাজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ সব ভাস্কর্য।
শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ খান নিউজবাংলাকে জানান, বঙ্গব্ন্ধুর ভাস্কর্যের নিরাপত্তা জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নগরীতে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে না পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর বড়পোল মোড়ে বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠ ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের অক্সিজেন-কুয়াইশ সংযোগ সড়ক দুই প্রান্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল রয়েছে। এ ছাড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনসহ নগরীর অনেক জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, মুর্যাল রয়েছে।
কুষ্টিয়ায় শুক্রবার রাত দুই টার দিকে দুই যুবক ভাস্কর্যটি ভেঙে দেয় বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পেয়েছে পুলিশ। তাদেরকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ভিডিও দেখে পুলিশের অনুমান, ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বাহিনীটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
ফুটেজে দেখা যায়, রাত ২টা পাঁচ মিনিটের সময় পাঁচ রাস্তার মোড়ে ভাস্কর্যের কাছে যান পাজামা পাঞ্জাবি পরা দুই জন। এক জন উপরে উঠে হাতুড়ি জাতীয় কিছু একটা দিয়ে ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন।
পুলিশের ধারণা, যারা ভাস্কর্য ভেঙেছে তারা অন্য জেলা অথবা গ্রামাঞ্চল থেকে কুষ্টিয়ায় আসেন।
পুলিশ পাঁচ রাস্তার মোড়ের দোকানগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেখেছে।
কুষ্টিয়ায় যে স্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে, সেখানে তিনটি ভাস্কর্য বসানো হবে বলে জানিয়েছেন পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম।
তিনি জানান, ভেঙে দেয়া ভাস্কর্যটি তারা মেরামত করার চেষ্টা করবেন। সেটা সম্ভব না হলে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
রবিউল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ রাস্তার মোড়ে একই আকারের বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাস্কর্য থাকবে। একটি হবে ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি। অন্য দুটি ছয় দফা আন্দোলনের এবং বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিকৃতি। এই তিনটি ভাস্কর্যের সম্মুখভাগ থাকবে তিন দিকে। আর এর নিচের দিকে জাতীয় চার নেতার চারটি ভাস্কর্য থাকবে।’
ভাস্কর্যগুলোর পোর্টেট বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টিবোর্ড থেকে অনুমোদিত বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
গত নভেম্বরে কুষ্টিয়া পৌরসভা নিজস্ব অর্থায়নে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। দরপত্রের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকায় কাজ পান ভাস্কর মাহবুব জামাল শামীম।শামীম এখন কুষ্টিয়াতেই আছেন। তিনি দেখছেন, এটি মেরামত করা সম্ভব কি-না।