বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে চান ভাস্কর্যবিরোধীরা

  •    
  • ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৪:৫৭

ভাস্কর্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে সভা সমাবেশে কওমি আলেমদের উদ্বেগ। বলা হয়েছে, উষ্কানিমূলক বক্তব্য, অবমাননাকর মন্তব্য, উগ্র স্লোগান, মিছিল- সমাবেশ সমাজে অস্থিরতা বাড়াবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যুতে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চান এই স্থাপনা নির্মাণের বিরোধিতাকারী কওমি আলেমরা।

ভাস্কর্যবিরোধীদের বিরোধিতা করে সভা সমাবেশে উষ্মাও প্রকাশ করা হয়েছে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকে।

বৈঠক শেষে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, উষ্কানিমূলক বক্তব্য, অবমাননাকর মন্তব্য, উগ্র স্লোগান, মিছিল- সমাবেশ সমাজে অস্থিরতা বাড়াবে।

বলা হয়েছে, ‘উলামায়ে কেরাম কঠোর ধৈর্য অবলম্বন করা সত্বেও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার আশঙ্কা প্রবল। সরকারকে এ সবের উপযুক্ত প্রতিবিধান করতে হবে।’

 

অন্যথায় দেশে বিশৃংখলা ও অস্থিরতা হলে দায় সরকার এড়িয়ে যেতে পারবে না বলেও মন্তব্য করা হয়।

সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার আবেদন করবেন আলেমরা। এ জন্য চিঠিও দেয়া হবে। 

বৈঠক শেষে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারাসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাহফুজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে আলোচনা হওয়া পাঁচটি প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো ও দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আলেমরা। এই করোনা মহামারীর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করা সম্ভব না হলে, ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে সিদ্ধান্তগুলো জানানো হবে।’

শনিবার যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধী ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠনের শীর্ষ নেতারা এক বৈঠকে বসেন।

 

চার ঘণ্টারও বেশি সময় আলোচনা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের পাঁচটি প্রস্তাব সম্বলিত একটি বিজ্ঞপ্তি ধরিয়ে দেয়া হয়। 

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে এই বেদিতে তৈরি হবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য

 

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্ নির্মাণের বিরোধিতা করছে ধর্মভিত্তিক বেশ কিছু দল। শুরুতে আক্রমণাত্মক বক্তব্যও আসে। বলা হয়, ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে তা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়া হবে।

পরে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, ভাস্কর্য যেই নির্মাণ করুক না কেন, তারা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবেন।

 

তবে তাদের এই বক্তব্যেরও প্রতিক্রিয়া হয়েছে ব্যাপক। ধর্মভিত্তিক দলগুলোর বিরুদ্ধে মাঠে নামে ক্ষমতাসীন দল সমর্থন সংগঠনগুলো। তারা বিশেষ করে মাদ্রাসায় ছাত্রদের ধর্ষণের বিষয়টি সামনে এনে ব্যাপক সমালোচনা করছেন। বলছেন, ভাস্কর্য নিয়ে চিন্তা না করে মাদ্রাসায় বলাৎকার ইস্যুটির সমাধান করতে।

সরকার সমর্থকদের পাশাপাশি মাদ্রাসায় বলাৎকারের সমাধান করতে পরামর্শ দিয়েছেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীও যিনি গত কয়েক বছরে কওমি আলেমদের প্রশংসা করে নানা সময় বক্তব্য দিয়ে এসে তাদের কাছাকাছি এসেছেন।

 

যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণেরবিরোধিতা করে প্রথমে মাঠে নামে ইসলামী আন্দোলন। পরে একই বক্তব্য দেয় হেফাজতে ইসলাম

 

উপস্থিত ছিলেন হেফাজত নেতা নূর হোসাইন কাসেমী, মাহফুজুল হক, মামুনুল হক, হেফাজতের উপদেষ্টা কমিটিতে রাখা মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, খেলাফত আন্দোলনের নেতা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মুফতি রুহুল আমীনসহ কওমি শীর্ষ আলেমরা।

 

পাঁচ প্রস্তাব

#যে কোনো উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হোক না কেন মানবমূর্তি ও ভাস্কর্য ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ দাবি করে বলা হয়, ‘এতে মুসলিম মৃত ব্যক্তির আত্মার কষ্ট হয়।’

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্ নির্মাণ না করে ‘শতকরা ৯২ ভাগ মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার আলোকে’ কোরআন সুন্নাহর সমর্থিত কোন উত্তম বিকল্প সন্ধান করাকে যুক্তিযুক্ত বলে মন্তব্য করা হয় এতে।

 

 

# বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নাশের জন্য উষ্কানিমূলক কর্মকাণ্ড চলছে মন্তব্য করে দাবি করা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মহানবী (সা.) এর অবমাননাকর আচরণ করা হচ্ছে। তাদের উপর কঠোর নজরদারি ও দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয়েছে।

ভাস্কর্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজপথে প্রথম বিক্ষোভ হয় চট্টগ্রামে। বিক্ষোভের মুখে হেফাজত নেতা মামুনুল হক জেলায় একটি মাহফিলে যোগ দেননি।

 

# বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার করা আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে মামলার প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়েছে।

ধোলাইপাড় চত্বরের পাশে ক্ষতিগ্রস্ত পুনঃনির্মিত মসজিদটি নামাজের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবিও করা হয়েছে।

# শব্দ দূষণ ও জনদুর্ভোগ এড়াতে লাউড স্পিকার ব্যবহারে প্রশাসানের নিষেধাজ্ঞারও বিরোধিতা করা হয়।

 

বলা হয়, সাধারণ শব্দ দূষণ, উচ্চস্বরে গান বাজনা নিয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেই। কিন্তু ওয়াজ মাহফিল এই বিশেষ নির্দেশনা অনভিপ্রেত।

রাজপথে সরকার সমর্থকরা শক্তি দেখানোর পর ভাস্কর্যবিরোধীদের সুর নরম হয়েছে

 

#প্রস্তাবে বলা হয়, যে সব বিষয় শরিয়তে নিষিদ্ধ ও হারাম, সে সব বিষয়ে কোরআন সুন্নার আলোকে সঠিক বক্তব্য তুলে ধরা আলেমদের দায়িত্ব। অথচ এক শ্রেণির মানুষ এ নিয়ে আলেমদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে।

 

আলেমদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও দায়িত্বহীন আচরণ চলছে অভিযোগ করে বলা হয়, ‘কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনাশের উস্কানি দিচ্ছে।’

 

‘উস্কানিমূলক বক্তব্য, অবমাননারকর মন্তব্য, উগ্র স্লোগান’, মিছিল-মিটিং, সমাজের অস্থিরতা বৃদ্ধি বাড়াবে উল্লেখ করে বলা হয়,

‘এসবের খোঁজ খবর রাখা ও শান্তি পূর্ণ সমাধান খুজে বের করা সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব।’

এ বিভাগের আরো খবর