যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তা মেনে চলতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীটির ৯৫তম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি আদর্শ নিয়ে স্বাধীন হয়েছে। কাজেই সে আদর্শ নিয়েই চলতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালনে নির্ভীক থাকতে হবে। আবার যারা অধস্তন তাদের প্রতিও সহমর্মিতা নিয়ে কাজ করতে হবে।’
নবীন সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব সময় মনে রাখতে হবে, যেকোনো সুশৃঙ্খল বাহিনীর জন্য শৃঙ্খলা সব থেকে বড় প্রয়োজন। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সবাইকে কাজ করতে হবে।’
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অনুষ্ঠানে স্বশরীরে উপস্থিত না থাকতে পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন সরকার প্রধান।
৭৫ পরবর্তী কোনো সরকারই সীমান্ত সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করেনি বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকেই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়। সীমান্তের যেসব জায়গা উন্মুক্ত ছিল সেসব জায়গায় আমরা নতুন নতুন বর্ডার পোস্ট তৈরি করছি।’
মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইপিআরের ভূমিকা তুলে ধরেন সরকার প্রধান। দেশের সীমান্ত বাহিনীকে ত্রিমাত্রিক হিসেবে গড়ে তুলতে ‘বর্ডার গার্ড ভিশন-২০৪১’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘হেলিকপ্টার কেনা হয়েছে, ভালো মানের জলযান আমরা নিচ্ছি। অর্থাৎ জলে, স্থলে, আকাশে সব ক্ষেত্রেই এখন বিজিবির একটা বিচরণ আছে।
‘এরই মধ্যে ১৫ হাজার জনবল নেয়া হচ্ছে। ধাপে ধাপে এটা বাড়ানো হবে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নারী সদস্যও প্রথম আমরাই নিতে শুরু করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আধুনিক সরঞ্জামের জন্যও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেমন: সীমান্তের বিওপিগুলো (বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট) উন্নত মানের করা হচ্ছে। আধুনিক সার্ভিলেন্স ইকুইপমেন্ট স্থাপন করা, অত্যাধুনিক এটিসি ভেহিক্যাল, দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করে আমরা বর্ডারগার্ডকে উন্নত করে গড়ে তুলছি।
‘একটা আধুনিক যুগে আমরা প্রবেশ করেছি, আমাদের সীমান্তরক্ষীরাও সেভাবে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন হবে।’
বিজিবি সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পাঁচটি হাসপাতালকে আরও উন্নত করা হচ্ছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।
শ্রেষ্ঠ ফায়ারার বিজিবির নারী সদস্য হাসিনা আক্তার বিথিকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেয়েরা যে ভালো ফায়ার পারে, এটিই প্রমাণ হলো। আর নামটাও আমার নামে, তাই আনন্দ হচ্ছে।’
করোনা প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘শীতের প্রকোপ বাড়ছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনার প্রকোপ বাড়ছে। আমাদেরও সচেতন থাকতে হবে। আপনারা নিজেরা সুরক্ষিত থাকবেন, পরিবারকেও সুরক্ষিত রাখবেন।’