বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে কেন্দ্র করে উত্থাপিত বিতর্কে ‘মূর্তি’ প্রসঙ্গটি অবজ্ঞা ও অবহেলায় আলোচিত হচ্ছে বলে মনে করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ নিন্দা জানায়।
পরিষদ মনে করে, এর মধ্য দিয়ে দেশে অন্য সম্প্রদায় এবং তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে অহেতুক হেয় এবং সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রচার করা হচ্ছে। ধর্মীয় স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে পরিষদের সভাপতি সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত নিম চন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও এবং সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রাণা দাশগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় শাশ্বতকাল থেকে তাদের আরাধ্য দেব-দেবতার মূর্তি পূজা করে আসছে। বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় ঠিক একইভাবে ভগবান বুদ্ধ ও প্রভু যিশুর মূর্তিকে সামনে রেখে তাদের ধর্মাচরণ ও ধর্মানুশীলন করে। এদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে বা তাদের ধর্মকে অবজ্ঞা করে বিভিন্ন মহল থেকে যেভাবে ‘মূর্তি’ শব্দটি বিদ্যমান বির্তকে তুলে ধরা হচ্ছে তা দুঃখ ও উদ্বেগজনক।
অনতিবিলম্বে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য সব মহলের প্রতি পরিষদ আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মূর্তিপূজকরা’ বাংলাদেশে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু হতে পারে। কিন্তু গোটা বিশ্বে তারা সংখ্যালঘু নয়। বিষয়টি সবারই ভাবার সময় এসেছে।
ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে সম্প্রতি মাঠে নামে ইসলামী আন্দোলন। পরে একই সুর তুলে হেফাজতে ইসলাম। তারা হুমকি দিয়েছে, ভাস্কর্য হলে টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে।
শুরুতে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ থাকলেও সম্প্রতি তারা মাঠে নেমেছে। ভাস্কর্য হলে আরেকটি শাপলা চত্বর তৈরির হুমকি দেয়া হেফাজত নেতা মামুনুল হক প্রতিরোধের মধ্যে পড়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে এখন ভাস্কর্যবিরোধী ধর্মভিত্তিক দলগুলো সুর নরম করেছে।
এরই মধ্যে শুক্রবার রাজধানীতে জুমার নামাজের পর ভাস্কর্যবিরোধী মিছিল করার চেষ্টা করলে লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। মিছিলকারীরা কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক হলেও তারা কোনো দল বা সংগঠনের ব্যানার বহন করেননি।