সরকারকে মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বলেছেন, ‘সরকারকে বলব, এদের বিরুদ্ধে দুর্বলতা নয়। অবশ্যই কঠোর হস্তে এদের দমন করতে হবে।’
শুক্রবার যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগের আয়োজনে এ সভা হয়। তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওই সভায় যুক্ত হন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ শেখ ফজলুল হক মনির কর্মজীবনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনে শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন উজ্জল নক্ষত্র। যিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে থেকে সব সময় পরামর্শ পেতেন।’
যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ সেলিম বলেন, ইসলামের দোহাই দিয়ে এরা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করতে চায়। এরা সেই শক্তি যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের সহায়তা করেছে। যুবলীগকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তি যাতে দেশে মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে।
মৌলবাদীদের পরাজিত পাকিস্তানিদের দোসর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের অতীত দেখলে পাওয়া যাবে, একাত্তর সালে এদের ভূমিকা কী ছিল।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘আমার বাবা বিশ্বাস করতেন যে সমস্যাকে চেপে রেখে নয়, সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধান করতে হবে। তাই আমি মনে করি আজকে যে মৌলবাদের উত্থান হওয়ার পায়তারা; এটারও গভীরে যেতে হবে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্মভীরু জাতি কিন্তু আমরা ধর্মান্ধ নই। ’৭০-৮০ এর দশকে আমি যখন বড় হয়েছি আমি কিন্তু মৌলবাদের প্রভাব অনুভব করিনি। তাহলে কীভাবে সমাজে এই ব্যাধি আসলো। যে সমাজ ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী সে সমাজে মৌলবাদীরা এভাবে আঘাত হানছে। কিছু একটা তো হয়ে মৌলবাদীরা গণতন্ত্রকে হুমকি দিতে পারছে।’
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘আমার বাবা বলেছিলেন, “রাজনৈতিক যুদ্ধে আমাদের পরাজিত করতে পারে এমন শক্তি সহজে জন্মাবে না। কিন্তু আমাদের সমাজনীতি ও অর্থনীতি যদি ব্যর্থ হয়ে যায় তাহলে রাজনীতিটাই টিকবে না।”’
তিনি আরও বলেন, ‘মৌলবাদ ও ধর্মান্ধতা কিন্তু সমাজনীতির অংশ। শ্রেণিবৈষম্য ও দুর্নীতি এগুলোও সমাজনীতির অংশ। সুতরাং এগুলো যদি আমরা মোকাবিলা না করতে পারি তা হলে সমস্যা কিন্তু থেকেই যাবে। আমাদের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে না, যতক্ষণ না আমরা সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে পারি।’
সভায় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, 'অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে হায়েনার দল ছোবল হানতে চায়। কিন্তু মৌলবাদী এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে আমরা (যুবলীগ) কোথাও নামতে দেব না। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির জন্মদিনে এটাই আমাদের শপথ।’