দ্রুত সময়ে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা শুক্রবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক শনিবার সকাল ১০ টায় ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের ১০ জেলায় এই কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ইতোমধ্যে এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে একদিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। অ্যান্টিজেন পরীক্ষার কিট আমদানি করা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, যেসব জেলায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই এমন ১০ জেলায় এই কার্যক্রম শুরু হবে। ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে এ পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে বিনা মূল্যে এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে সরকার।
প্রাথমিকভাবে গাইবান্ধা, মুন্সিগঞ্জ, পঞ্চগড়, মাদারীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর, মেহেরপুর, সিলেট, জয়পুরহাট ও পটুয়াখালী-এই ১০ জেলায় অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হচ্ছে।
করোনার (কোভিড-১৯) উপসর্গ আছে এমন সন্দেহজনক রোগীর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হবে। এমন রোগীর পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলে আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হবে।
এই পরীক্ষার কোনো নীতিমালা তৈরি হয়েছে কি না জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, এমন কোনো নীতিমালা এখনও তৈরি হয়নি। প্রাথমিকভাবে যে সব জেলায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষার কোনো সুযোগ নেই সেই সব জেলায় এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল ১০ জেলায়, এক সপ্তাহ পরে আরও ১০ জেলায় এই পরীক্ষা শুরু করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা এই পরীক্ষার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের খবর জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে সরকার।
দেশে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ায় দ্রুত রোগী শনাক্তের জন্য বিশেষজ্ঞরা অ্যান্টিজেন পরীক্ষার পরামর্শ দেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমোদন দেয় সরকার। তবে কোনো প্রকার নীতিমালা ছাড়াই আড়াই মাস পর কাল এই পরীক্ষা চালু হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কারও শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা দ্রুত সময়ের মধ্যে জানার পদ্ধতি হলো অ্যান্টিজেন টেস্ট। এ পদ্ধতিতে করোনা শনাক্তের জন্য ব্যক্তি বা প্রাণীর নাক বা মুখ গহ্বর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে জানা যায় এর ফলাফল। তবে সারাবিশ্বে করোনা শনাক্তের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন বা আরটি-পিসিআর পদ্ধতি।