ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে অবস্থিত মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্বর্যের কান ভাঙার ঘটনায় সম্পৃক্তদের খুঁজছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার রাত ১০ টার দিকে মধুদার ভাস্কর্যের বাম কানটি ভাঙা পাওয়া যায়। এর সঙ্গে জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা নিয়ে যখন বেশ কয়েকটি দল বিরোধিতা করছে তখন এ ঘটনা ঘটল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী নিউজবাংলাকে বলেন, গত রাতে ১০ টার সময় আমি জানতে পারি, মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্যের একটি কান কে বা কারা ভেঙে দিয়েছে। সংবাদ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও মধুর ক্যানটিনের কর্মচারীদের দিয়ে কানটি আগের জায়গায় স্থাপন করে দেয়া হয়েছে।
গোলাম রব্বানী জানান, কানটি ভাস্কর্যের কাছেই পড়ে ছিল, যে কারণে দ্রুত মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। কে বা কারা এই কাজ করেছে এ বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো কিছু না জেনে কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে অন্যকে দোষারোপ করা ঠিক হবে না। ভাস্কর্যে আঘাতটি খেয়ালের বশে হয়েছে, নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, তা এখনো জানা যায়নি। কারা কী উদ্দেশে কাজটি করেছে এ বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না।’
এ বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানান, শাহবাগ পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের বিষয়টি দেখার জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রকৃত নাম মধুসূদন দে হলেও ‘মধুদা’ নামে পরিচিত ছিলেন মধুর ক্যানটিনের প্রতিষ্ঠাতা। ক্যানটিনটি ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।
ক্যানটিন চালালেও মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবা আদিত্য চন্দ্রের সঙ্গে ঢাকায় আসা মধুসূদন দে ছিলেন সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সোচ্চার। ওই সময়ের আন্দোলন সংগ্রামে ছিল তার সম্পৃক্ততা।
এসব কর্মকাণ্ডের কারণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন মধু দা। ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালের সেই বর্বর কালরাতে হানাদার বাহিনী তাকে জগন্নাথ হল থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং সেই রাত্রেই হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধের পর মধুদার ছেলে অরুণ কুমার দে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্যানটিনটি পরিচালনার দায়িত্ব পান।