বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আর ভ্যান চালাবে না শম্পা, দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ২ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৬:৫৬

পাঁচ বছর আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা ভেঙে যায় শম্পার বাবা শরিফুলের। বাবার চিকিৎসার খরচ চালাতে ভ্যান চালাত কিশোরী শম্পা। ফেসবুকে তার পরিবারের খবর ভাইরাল হলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিষয়টির তদন্ত করেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক। তিনি প্রতিবেদন দিলে শম্পার পরিবারের দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী।

জামালপুরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শম্পা খাতুনের পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে সংসার চালাতে তাকে আর ভ্যান চালাতে হবে না।

শম্পার বাবা শরিফুল ইসলামের চিকিৎসার খরচ বহন, নতুন ঘর নির্মাণ, শম্পার লেখাপড়ার খরচ ও তাদের নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন সরকার প্রধান।

এসব শোনার পর শম্পার পরিবারের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি, বুকে ফিরেছে আশার আলো। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর শম্পার পরিবারে সুখের দৃশ্য দেখতে তাদের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।

বুধবার শুরু হয়েছে শম্পার পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী দেয়া ঘর নির্মাণের কাজ। জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক এই নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ঘরটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এ সময় জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াছমিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য শরিফুল ইসলামকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

প্রশাসনের লোকজন বাড়িতে যাওয়ার পর বাবাকে বিদায় জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে

 

শরিফুল ইসলামের মেয়ে শম্পা জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।

পাঁচ বছর আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা ভেঙে যায় শম্পার বাবা শরিফুলের। প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল ও পরে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে সাত লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসার পরেও ভালো হয়নি সে পা। এরপর থেকেই সবসময় বিছানায় থাকতে হয় শরিফুল ইসলামকে।

প্রথমে সবজি বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেন শম্পার মা নেবুজা বেগম। সেই উপার্জনেও যখন সংসার চলে না, তখন বাবার ওষুধ টাকা সংগ্রহের জন্য দেড় বছর আগে ভ্যান চালানো শুরু করে শম্পা। 

শম্পার বাবাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে

 

সম্প্রতি শম্পার পরিবারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেন জেলা প্রশাসককে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ পেয়ে জেলা প্রশাসক এনামুল হক নাকাটি গ্রামে শম্পার বাড়ি গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। মঙ্গলবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠান। এরপর শম্পার পরিবারের সকল দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শম্পাদের জন্য বাড়ির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করছেন জেলা প্রশাসক এনামুল হক

 

শম্পার বাবা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আঙ্গরে খুব কষ্টে দিন যাইত। খায়ে, না খায়ে থাকতাম। মেয়েঠা আমার ভ্যান চালাইত। এইডে দেখতেউ খারাপ লাগত। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঙ্গরে দায়িত্ব নিছে। আমরা খুব খুশি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আল্লাহর কাছে দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে বহুতদিন বাইচে থাকে।’

শম্পার মা নেবুজা বেগম বলেন, ‘মেয়েঠা আমার ভ্যান নিয়ে গেলেই চিন্তের মদ্যে থাকতাম সারাঠা দিন। এই এতটুক মেয়ে ভ্যান চালাইত। কি যে কষ্ট করত মেয়েঠা আমার! আস্তে আস্তে মেয়েঠাও আমার দুর্বল হয়ে যাইতাছিল। প্রধানমন্ত্রী আঙ্গরে নয়া ঘর দিতাছে, মেয়েঠা পড়ার খরচ দিব। আঙ্গরে দায়িত্ব নিছে। আমরা কি কয়ে প্রধানমন্ত্রীরে ধন্যবাদ দিমু বুঝতাছি না। খালি আল্লাহর কাছে দোয়া করি যে প্রধানমন্ত্রী যাতে সবসময় বালা থাকে, সুস্থ থাকে।’

শম্পাদের বাড়িতে জামালপুর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা 

 

শম্পা বলেন, ‘আমি আমার বাপের জন্য অনেক কষ্ট করছি। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার বাপের চিকিৎসার দায়িত্ব নিছে। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা সারাজীবন তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।’

জামালপুরের জেলা প্রশাসক এনামুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার পাশাপাশি শরিফুল ইসলামের চিকিৎসা, তাদের নতুন ঘর নির্মাণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার বাবাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সবসময় তার পরিবারের খোঁজ খবর নেবে এবং সহায়তা করবে।’

এ বিভাগের আরো খবর