আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে গ্রেফতারে দুই মাস আগে আবেদন করলেও পরোয়ানা জারি না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।
উচ্চ আদালতের ভাষ্য, অর্থপাচারকারীরা যত বড় ক্ষমতাশালীই হোক না কেন, ছাড় দেয়া হবে না।
বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করে।
আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পি কে হালদারের বিরুদ্ধে করা এজাহারের ফটোকপি ও গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদনের কপি জমার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলার শুনানির সময় বিচারকরা বলেন, সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও তাকে গ্রেফতারে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে গত ১৯ নভেম্বর রুল জারি করে হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার মামলার শুনানি হয়। পরে আদালত এ আদেশ দেন।
মঙ্গলবার পি কে হালদারকে ধরে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে সাহায্য চাইবে বলে জানিয়েছিলেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আইএলএফএসএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার
এর আগে দুদকের আইনজীবী আদালতকে জানান, পি কে হালদারকে ধরে আনতে ইন্টারপোলের কাছে সহযোগিতার আবেদন করা হয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর পি কে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়ে একটি আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।
আবেদনের শুনানি নিয়ে ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট পি কে হালদার দেশে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। এ আদেশের পর অসুস্থতার অজুহাতে দেশে ফিরবেন না বলে জানান পি কে হালদার।
বর্তমানে কানাডায় আছেন পি কে হালদার। তার বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে বিভিন্ন কৌশলে দেড় হাজার কোটি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে আরও দুই হাজার কোটি টাকা বের করে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পি কে হালদার। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা।
হালদারের বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
চলতি বছরের শুরুতে পি কে হালদার বিদেশে পালিয়ে যান বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর তার পাসপোর্ট, সম্পত্তি জব্দ করা হয়। আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে তাকে অপসারণও করা হয়।