সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলায় বুধবার অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এর মধ্যে দিয়ে তিন দশকেরও বেশি আগে আলোচিত এই হত্যার বিচার শুরু হলো।
ঢাকার মহানগর দায়রা আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ।
এর আগে আদালত কয়েক দফা অভিযোগ গঠনের তারিখ দিলেও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা পেছানো হয়।
এ মামলার আসামিরা হলেন- নিহত সগিরা মোর্শেদের ভাশুর হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও সন্দেহভাজন 'ভাড়াটে খুনি' মারুফ রেজা।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ সালাম ভিকারুননিসা স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছামাত্র মোটরসাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতের সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তিনি দৌঁড় দিলে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে সগিরা মোর্শেদ মারা যান।
ওইদিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন সগিরা মোর্শেদ সালামের স্বামী সালাম চৌধুরী। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুই জনকে শনাক্ত করলেও অজ্ঞাত কারণে মিন্টু ওরফে মন্টু ওরফে মরণ নামে একজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।
১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দীক। সাক্ষ্য নেয়া হয় সাতজনের।
সাক্ষ্যে বাদীপক্ষ থেকে বলা হয়, তদন্তের সময়ে আসামি মন্টু এবং তৎকালীন (১৯৮৯) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজা গ্রেফতার হন। কিন্তু মারুফ রেজার নাম বাদ দিয়েই অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলার সময়ে মারুফ রেজার নাম আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ১৯৯১ সালের ২৩ মে মামলার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা রিভিশন আবেদন করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট মামলাটির অধিকতর তদন্তের আদেশ ও বিচারকাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করার পাশাপাশি অধিকতর তদন্তের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল দেয়।
পরের বছর ২৭ আগস্ট জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার বিচারকাজ স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
এ মামলার সবশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সম্প্রতি বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের নজরে আনলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।
এরপর বিষয়টি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে তোলা হয়। আদালত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিলে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।