সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তির অর্থের উৎস জানতে প্রশাসনিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর দোয়েল চত্বর এলাকায় সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এক মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।
এ সময় পরশ বলেন, ‘তাদের টাকা কোথা থেকে আসছে, তাদের এজেন্ডাই বা কি, এগুলোর বিষয়ে প্রশাসনিক তদন্ত হওয়া উচিত।’
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে পরশ বলেন, ‘এবার যখন আমরা (যুবলীগ) ধরব, সব ফাইনাল হয়ে যাবে। এবার আর কোনো আপস নয়। কুচক্রী মহল তৈরি করে বারবার ফায়দা লোটা হবে না।
‘প্রশাসনকে আহ্বান করছি, তদন্তের মাধ্যমে এদের চিহ্নিত করুন। আমরা মাঠে আছি দেখে নেব তাদের। চোরের দশ দিন, গেরস্তের এক দিন।’
‘ষড়যন্ত্র’ মোকাবিলায় যুবলীগ কর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশও দেন পরশ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরি নিয়ে কয়েকটি ইসলামপন্থী সংগঠনের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে ৬০ টি সংগঠন মঙ্গলবার যৌথ কর্মসূচি পালন করে। এগুলোর মধ্যে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটও রয়েছে।
রাজধানীতে যুবলীগের মানববন্ধন। ছবি: নিউজবাংলা
সাম্প্রদায়িক শক্তির মদদদাতাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান যুবলীগ চেয়ারম্যান। বলেন, ‘এই দেশের মাটিতেই তাদের শাস্তি দিতে হবে। তারা যেন বারবার স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-দেশপ্রেমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে এজন্য তাদের একেবারে নির্মূল করে দিতে হবে।’
রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করছে ধর্মভিত্তিক বেশ কয়েকটি সংগঠন। প্রথমে এই ইস্যুতে মাঠে নামে চরমোনাইয়ের পীরের দল ইসলামী আন্দোলন। তারা হুমকি দেয় ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়া হবে। যদিও এখন এই ইস্যুতে চুপ আছেন নেতারা।
এ ছাড়া ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতায় নামে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনের আমির জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তারা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবেন। সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক হুমকি দিয়েছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তিনি দেশে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি আবার তৈরি করবেন।
শুরুতে নীরব থাকলেও গত শুক্রবার বাবুনগরী হুমকি দেয়ার পর থেকে মুখ খুলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
রোববার এই ইস্যুতে সারাদেশে একযোগে কর্মসূচি পালন করে হাজার হাজার মানুষকে রাজপথে নিয়ে আসে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ। ওই দিনই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে যুবলীগ।