বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান ছিলেন বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার বিজয়ের মাসের প্রথম দিন রাজধানী ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধায় নবনির্মিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজ’ এর প্রথম দিনের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে প্রথম দিনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও মননশীলতার ওপর গবেষণা প্রয়োজন। এ কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর প্রথম কার্যালয় সুগন্ধায় বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর ডিপলোমেটিক স্ট্রাটেজি এন্ড রিসার্চ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন প্রকৃতপক্ষে জনগণের বন্ধু এবং অত্যন্ত দূরদর্শী নেতা। বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। জনগণের অধিকার আদায়, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বঞ্চনা ও বৈষম্য দূরীকরণে তিনি তার সমগ্র জীবন ব্যয় করেছেন। জনগণের ক্ষমতায়নে সারা জীবন কাজ করে গেছেন।’
বাংলাদেশের ৬৮টি বৈদেশিক মিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী, শিক্ষকসহ প্রবাসীদের অংশগ্রহণে সেমিনার, ওয়ার্কশপ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বনেতৃবৃন্দের নিকট আমরা বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতে চাই।’
ড. মোমেন বলেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আয়োজন করতে চায়। বঙ্গবন্ধু সবসময় বিশ্বাস করতেন, উন্নয়নের জন্য শান্তি প্রয়োজন। অসহিষ্ণুতার জন্য বিশ্বে সংঘাত, যুদ্ধ ও সন্ত্রাস বাড়ছে। ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতার জন্য রোহিঙ্গাদের পৈতৃকভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দুই জন বিশিষ্ট কূটনীতিককে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে একজন বাংলাদেশি ও একজন বিদেশীকে স্বর্ণপদক প্রদানের জন্য ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে নাম ঘোষণা করা হবে।
মূল প্রবন্ধে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ধারণাকে বঙ্গবন্ধু ধারবাহিকভাবে সাধারণ মানুষের মাঝে বোধগম্য ও জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। এভাবে তিনি জাতি গঠন ও জাতি রাষ্ট্রের ধারণাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দৃঢভাবে বিশ্বাস করতেন দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য উর্বর ভূমি ও বিশাল জনগোষ্ঠীসহ সবকিছুই তার ছিল। দারিদ্র দূরীকরণ এবং বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জনকল্যাণের নীতি অনুসরণ করেন জাতির পিতা।
ছোটবেলা থেকে বঙ্গবন্ধুর সাহসী ও নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে মন্তব্য করে মুহিত বলেন, বিখ্যাত নেতা সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে তার আজীবন সম্পর্ক ছিল ছাত্র-শিক্ষকের। জাতির পিতা মাত্র তিন বছর সাত মাসে সংবিধান সংশোধনসহ ৫১৯টি আইন পাস বা সংশোধন করেছিলেন, যাতে জনগণের সকল বিষয় ছিল।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম। দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনীতিক, বুদ্ধিজীবী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শেণিপেশার মানুষ ভার্চুয়ালি ও সরাসরি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।