আট দিনে ই-নামজারি কার্যক্রম শুরু হলো ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে। ভূমি বিরোধপূর্ণ এলাকা হিসাবে পরিচিত সাভারে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে সহকারি কমিশনার ভূমি (এসি ল্যান্ড) অফিসের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এর সূচনা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় প্রশাসন।
ই-নামজারি ও ই-রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকার যে ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি ও এসিল্যান্ড অফিস ধরে একটি পাইলট প্রকল্পের জন্য কাজ করছে, সাভার তার একটি। অনেকটা পরীক্ষামূলকভাবে এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এর অভিজ্ঞতা অন্যান্য অফিসে কাজে লাগানো হবে।
মঙ্গলবার থেকে জোড়া দলিল গ্রহণের মাধ্যমে সাভারের সাব-রেজিস্ট্রার আর তাহের মো. মোস্তফা আট দিনে ই-নামজারি কার্যক্রম শুরু করলেন। এর একটি অনুলিপি রেজিস্ট্রেশনের জন্য রেখে অপরটি তিনি দুই কর্মদিবসের মধ্যে এসি ল্যান্ড অফিসে পাঠিয়ে দেবেন।
এর মাধ্যমে এসি ল্যান্ড অফিস আট দিনের মধ্যে ই-নামজারি সম্পন্ন করবে। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদিত প্রতিশ্রুত একটি কাজ অতি দ্রুত বাস্তবায়িত হলো।
আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ৩০ নভেম্বর সোমবার নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আরম ঝিনুক একটি পরিপত্র জারির মাধ্যমে এ কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা দিয়েছেন।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, সাব-রেজিস্ট্রার দলিলের অনুলিপির ওপর ‘শুধুমাত্র সহকারি কমিশনার, ভূমি অফিসের নামজারি কার্যে ব্যবহারের জন্য’ লেখা সিল ব্যবহার করবেন। এর সঙ্গে তিনটি হস্তান্তর নোটিশ (এলটি নোটিশ) যুক্ত থাকবে।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে কোনো অনুলিপি গ্রহণ করতে হলে ১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট কর প্রদান করতে হয়। পরিপত্রে এ ধরনের অনুলিপির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য স্ট্যাম্প শুল্কমুক্ত করা হয়েছে। তবে রেজিস্ট্রেশন সারগ্রন্থ ২০১৪ তৃতীয় খণ্ডের ফিসের নিয়ম অনুযায়ী নকলনবিশদের পারিশ্রমিক আদায়যোগ্য হবে।
সাভার সাব-রেজিস্ট্রার নিউজ বাংলাকে জানান, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকের জারিকৃত পরিপত্রকে আইন হিসেবে মেনে দলিল রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে। দেশে এটাই প্রথম জোড়া দলিলের মাধ্যমে কার্যক্রম করতে হচ্ছে। আজকে যেসব জমি হস্তান্তর দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে এর প্রতিলিপি যথা সময়ে এসিল্যান্ড অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ প্রতিলিপির মাধ্যমেই সেখানে আট দিনের নামজারি সম্পন্ন করা হবে।
সাভার এসিল্যান্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, তারা আট দিনে ই-নামজারি করার জন্য প্রস্তুত। ইতিমধ্যে তারা অনলাইনে নামজারির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। এর সাথে যুক্ত হবে সরকার নির্দেশিত আট দিনে ই-নামজারির পদ্ধতি।
এসিল্যান্ড মাহফুজুর রহমান সাভার রেজিস্ট্রি অফিসে ই-নামজারির কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে জানেন না বলে জানান। তবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র পেলে সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব জাহিদ হোসেন বলেন-‘আট দিনে নামজারি কার্যক্রম চালু হওয়ার ফলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাবে। ফলে ই-রেজিস্ট্রেশন বাস্তবায়ন করার জন্য যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে, তাতেও গতি আসবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আট দিনে ই-নামজারির বিষয়টি অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখার উপসচিব মো. ছাইফুল ইসলাম ১৫ নভেম্বর তা অবহিত করে একটি চিঠি দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এর চার দিন পরই নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।