রংপুরের পীরগঞ্জে প্রথম শ্রেণির এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ এসেছে।
২০ বছর বয়সী রিয়াদ প্রধানকে এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। একই মামলার আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। তার নাম ধলি বেগম মাইয়ার।
মঙ্গলবার রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোস্তফা পাভেল রহমান আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
নিহত শিশুটি পীরগঞ্জ দুরামিঠিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
সরকার পক্ষের আইনজীবী মাকজিয়া হাসান দিবামনি জানান, ২০১৬ সালের ১৪ জুন শিশুটিকে আম খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন রিয়াদ। পরে শিশুটিকে গলা টিপে হত্যা করে খাটের নিচে সিমেন্টের বস্তায় ভরে মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখেন।
শিশুটি নিখোঁজের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হলে সে বছরের ১৭ জুন রিয়াদ পুলিশকে শিশুটির লাশের সন্ধান দেয়। পুলিশ তার ঘরে খাটের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
শিশুটির বাবা জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করার পরদিনই তিনি রিয়াদ ও ধলি মাইয়াকে আসামি করে পীরগঞ্জ থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন।
রিয়াদ প্রধানের বাড়িতে ধলি বেগম কাজ করতেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী কাওসার আলী জানান, পীরগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক নাজির হোসেন তদন্ত করে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর রিয়াদ ও ধলির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।
রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় শিশুটির মা বলেন, ‘মেয়েকে হারিয়েছি আর ফিরে পাব না। কিন্তু আদালত যে রায় দিয়েছে আমি তাতে সন্তুষ্ট। এ রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাই।’
তিনি জানান, আসামিপক্ষ এখনও হুমকি দিচ্ছে। তারা বলছে, হাইকোর্টে গিয়ে খালাস নিয়ে আসবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী কাজী মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মক্কেল চাইলে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
অবশ্য বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি ছাড়া কার্যকর করা যায় না। হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স শুনানি শেষে রায় বহাল থাকলে তার বিরুদ্ধে আপিল, এরপর রিভিউ আবেদন করার সুযোগ আছে।