রাজধানীর কাফরুলে এক নারীকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন সৎ ছেলেসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্য পাঁচ জন হলেন- ওই নারীর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, সৎ ছেলের স্ত্রী ও শ্যালক।
উত্তরখাঁন থানা এলাকা থেকে রোববার রাতে গ্রেফতার করা হয় সৎ ছেলে এস এম আশিকুর রহমান নাহিদকে।
আর সোমবার ভোরের দিকে কাফরুলের ইমান নগর ও আশপাশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাহিদের বাবা শাহজাহান শিকদার, মা রোকেয়া বেগম, শ্বশুর আসেক উল্লাহ, স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা আইরিন ও শ্যালক মোহাম্মদ সাকিবকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত সীমা বেগমের বড় ভাইয়ের দায়ের করা হত্যা মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিউজবাংলাকে জানান কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান।
গ্রেফতার ছয় জনকে সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কাফরুলে নিজ বাসায় রোববার বেলা ১১টার দিকে সীমা বেগমকে হত্যা করা হয়। দুপুরের পর পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। ধারাল অস্ত্রের আঘাতে নিহতের শরীর ছিল ক্ষতবিক্ষত; দাহ্য পদার্থের আগুনে পোড়া। গলায় প্যাঁচানো ছিল লুঙ্গি।
সীমাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা দেখে বিস্মিত খোদ পুলিশ। কেন এই নির্মম হত্যা সেটি নিয়ে অনুসন্ধান করছে তারা।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডির ক্রাইম সিনের কর্মকর্তারা আলামত সংগ্রহ করেছেন। প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের পর বাহিনীটির ধারণা, এই খুনে জড়িত সীমার সৎ ছেলে এম এম আশিকুর রহমান নাহিদ।
নাহিদ রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের বিবিএর শিক্ষার্থী। ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন, পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শাহজাহান সিকদারের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে আসেন সীমা বেগম। সৎ মাকে মেনে নিতে পারছিলেন না নাহিদ। এ নিয়ে সংসারে নানা ঝামেলাও হয়েছে।
নাহিদের মা মারা যাওয়ার পর গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের সীমা বেগমকে বিয়ে করেন শাহজাহান। তার বাড়ি পাশের জেলা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায়।
সীমার বড় ভাই হেলাল শরীফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার বোনকে ও (নাহিদ) দেখতে পারত না। ওরা মেরে ফেলছে।’
সীমা বেগমের খালাতো বোন মাহমুদ সৈয়দ বলেন, ‘ওর (সীমা) শরীরের অনেকগুলো ছুরির আঘাত ছিল। লুঙ্গি দিয়ে গলা প্যাঁচানো ছিল। এরপর পোড়াইয়া মারছে। আমরা এর বিচার চাই।’