বাবার সঙ্গে শত্রুতার জেরে পাঁচ বছরের শিশুকে হত্যা ও অঙ্গ কেটে অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় তিন জনের ফাঁসি ও এক জনের কারাদণ্ডের আদেশ এসেছে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত থেকে।
মামলায় মোট আসামি ছিলেন ১০ জন, যাদের মধ্যে ছয় জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক। যদিও শিশুটির বাবা দাবি করছেন, তিনি ন্যায়বিচার পাননি, শাস্তি হওয়া উচিত ছিল সবার।
রায়টি এসেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের আলোচিত শিশু সোয়াইব হত্যা মামলায়। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাটি সে সময় আলোড়ন তুলেছিল।
সাড়ে সাত বছর পর সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শেখ রাজিয়া সুলতানা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
বিচারক রাজু মিয়া, ফজল মুন্সি ও মো. জসিমকে ফাঁসিতে ঝোলানোর এবং মো. নাছিরকে ১০ বছর কারাগারে বন্দি রাখার আদেশ দেন। এদের সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে।
এছাড়া মামলার ছয় আসামিকে খালাস দেয় আদালত।
অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুর রহিম নিউজ বাংলাকে জানান, ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পাখির প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার মঙ্গলেরগাঁও এলাকার শান্তিনগর দারুন নাজাত নূরানী মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র সোয়াইব হোসেনকে অপহরণ করে সাজাপ্রাপ্তরা।
১০ বছর কারাদণ্ড পাওয়া মো. নাছির ও মৃত্যদণ্ড পাওয়া ফজল মুন্সি। ছবি: নিউজবাংলা
ছয়দিন পর একই এলাকায় ফজল মুন্সির বাড়ির পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাশে শিশু সোইয়াইবের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করে সেদিন রাতেই শিশুটির বাবা নাজমুল হোসেন মাসুম সোনারগাঁও থানায় মামলা করেন। পরে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগপত্র তৈরি হয়।
১০ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তারা জানান, বাবার সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে সোয়াইবকে অপহরণের পর গলাকেটে হত্যা করেন তারা। পরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কাটা হয় ও অ্যাসিড দিয়ে শরীর ঝলসে দেয়া হয়।
সোয়াইবের বাবা নাজমুল জানান, আদালতের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট নন। তার অভিযোগ, যাদেরকে খালাস দেয়া হয়েছে তারাও এই ঘটনায় জড়িত। সাজা পাওয়া উচিত ছিল তাদেরও।
খালাসের আদেশের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানান সোয়াইবের বাবা।