সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আট আসামির ডিএনএর সঙ্গে ঘটনাস্থলের ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ডিএনএ রিপোর্ট পেয়েছি। প্রধান আসামি সাইফুরসহ অন্যদের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে।’
দেশজুড়ে আলোড়ন তোলা ওই ঘটনার ডিএনএ প্রতিবেদন না পাওয়ায় অভিযোগপত্র দেয়া যায়নি বলে দাবি করে আসছিল পুলিশ।
ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ায় খুব দ্রুতই মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আশরাফ উল্লাহ।
ধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্ট, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এমসি কলেজ কর্তৃপক্ষের চার তদন্ত কমিটিই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি।
দুই মাস পরও ধর্ষণের শিকার নারী মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তিনি এখনও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
ওই রাতেই ওই নারীর স্বামী ছয় জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামি করে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেন।
ঘটনার পর পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম এবং সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর সবাইকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পায় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। কোনো পদে না থাকলেও গ্রেফতার হওয়া সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় ও কলেজ সূত্রে জানা যায়।
ওই ঘটনার পর দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইনও সংস্কার করে সরকার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, তাদের তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে এখনও ডিএনএ প্রতিবেদন পাননি। প্রতিবেদনটি হাতে পেলেই অভিযোগপত্র দেয়া হবে।
ধর্ষণের ওই ঘটনার রাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে আসামি সাইফুর রহমানের দখলে থাকা কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পুলিশ অস্ত্র আইনে মামলা করে। সেই মামলার অভিযোগপত্রও দেয়া হয়নি।