এলপিজি (সিলিন্ডার) গ্যাসের দাম পুননির্ধারণ সংক্রান্ত আদালতের আদেশ পালন না করায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননায় রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রোববার বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
গত ২৫ আগস্ট বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছিল।
ওই আদেশের তিন মাস কেটে গেলেও প্রতিবেদন দাখিল না করায় এ আদেশ দিল আদালত।
ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সম্পূরক আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ রুল জারি করল। আগামী ১৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতে ক্যাবের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। অন্যদিকে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের পক্ষে ছিলেন সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
এর আগে গত ১৭ নভেম্বর এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এক হলফনামার মাধ্যমে জানিয়েছিল- এলপিজি গ্যাসের মূল্য পুননির্ধারণ করে তিনটি বিধিমালা খসড়া করে ২০১৩ সালে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আইন মন্ত্রণায়ের কাছে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায় কমিশন। কমিশন ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও করেছে। যাদেরকে মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত সুপারিশ দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আদালতে দাখিলকৃত হলফনামায় আরও বলা হয়, খসড়া বিধিমালা চুড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং কিমিটির সপারিশ না দেয়া পর্যন্ত কমিশন মূল্য নির্ধারণ করতে পারে না।
আদালত তাদের এই হলফনামা নাকচ করে আদালত অবমাননার রুল জারি করে।
আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও এলপিজি (সিলিন্ডার) গ্যাসের দাম আমাদের দেশে কমছে না; বরং বেড়েই চলেছে। অথচ আইনই কমিশনকে ক্ষমতা দিয়েছে মূল্য নির্ধারণের জন্য। কিন্তু কমিশনের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তারা কোনো কাজ করেনি। আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন না করে বরং তারা আদালত অবমাননা করেছেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও এলপিজি (সিলিন্ডার) গ্যাসের দাম পুননির্ধারণ না করাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট।
গ্যাসের দাম পুননির্ধারণ না করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিল ভোক্তা অধিকার সংস্থা ক্যাব।
ওই রিট আবেদনে বলায় হয়, ২০০৯ সালে ১২.৫ কেজি ওজনের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৭০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বিইআরসি। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারের এই গ্যাসের দাম কয়েক দফা কমলেও আমাদের এখানে গণশুনানি করে দাম পুননির্ধারণ করা হয়নি। সাত বছর ধরে একই দাম নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে সিলিন্ডারের দাম পুননির্ধারণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই বিইআরসিতে আবেদন করে ক্যাব। ওই আবেদনটি নিষ্পত্তি না করে ঝুলিয়ে রাখে বিইআরসি। পরবর্তীতে তারা আদালতের শরণাপন্ন হন।