বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোল্ডেন মনিরের সর্বোচ্চ সাজা দাবি

  •    
  • ২৯ নভেম্বর, ২০২০ ১৩:২১

রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার প্রগতি সরণিতে ডিআইটি প্রজেক্টের সামনে ‘সরকারি জমিতে রাজাকার সিরাজ মিয়া স্কুলের নাম পরিবর্তন বাস্তবায়ন কমিটির’ ব্যানারে মানববন্ধন থেকে এ দাবি করে তারা।

র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজধানীর বাড্ডার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার প্রগতি সরণিতে ডিআইটি প্রজেক্টের সামনে ‘সরকারি জমিতে রাজাকার সিরাজ মিয়া স্কুলের নাম পরিবর্তন বাস্তবায়ন কমিটির’ ব্যানারে মানববন্ধন থেকে এ দাবি করে তারা।

মনিরের বাবা সিরাজ মিয়াকে রাজাকার দাবি করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা। তারা সরকারি জমিতে সিরাজের নামে করা স্কুলের নাম পরিবর্তনের দাবি জানান।

নাম পরিবর্তন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক জহিরুল আলম দিপু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মইন্না (মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির) একটা দুর্নীতিবাজ, চোরাকারবারি। তার বাবা সিরাজ মিয়া ছিলেন রাজাকার। দেশ স্বাধীনের আগে তার বাবা জনগণকে ভুগিয়েছে। এখন স্বাধীন দেশে এই গোল্ডেন মনির ভোগাইছে। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।’

তিনি বলেন, ‘এই যে স্কুল, এটাতে সে প্রতি বছর ছাত্রছাত্রীর ভর্তি পরীক্ষার জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা নিত; মাসে নিত প্রায় দুই হাজার। গরিব ছাত্র-ছাত্রীরা অনুরোধ নিয়ে গেলে বলত, এই স্কুল শুধু ধনীদের জন্য, গরিবের না।

‘অথচ মেরুল বাড্ডা দক্ষিণ বারিধারা আবাসিক পুনর্বাসন প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি মসজিদ, একটি বিদ্যালয়, একটি কলেজ ও একটি খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য রাজউক জমি বরাদ্দ দিয়েছিল। গোল্ডেন মনির সেটা রাজউকের কিছু দালালদের মাধ্যমে ৫০ টাকা কাঠা দরে ৭৬৫ টাকায় মোট ১৫ কাঠা ৪ ছটাক জমি বরাদ্দ নেয়।’

গত ২২ নভেম্বর গোল্ডেন মনিরকে ১১ দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ।

ওই দিন বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অস্ত্র আইনের মামলায় মনিরকে সাত দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে তাকে দুটি মামলায় সাত দিন জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।

ওই আদেশের পর আরেক বিচারক মাদক মামলায় মনিরকে চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিভিন্ন ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত আছে। অস্ত্র মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন।

স্কুলের নাম পরিবর্তনের দাবি

গোল্ডেন মনিরের কঠোর শাস্তির দাবির পাশাপাশি মানববন্ধনকারীরা সিরাজ মিয়া মেমোরিয়াল স্কুলের নাম পরিবর্তন করার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানা মহিলা যুবলীগের সভাপতি শাহনাজ পারভিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজউকের থেকে বরাদ্দ নিয়ে রাজউকের নাম পর্যন্ত দেয়নি, উল্টো এক রাজাকারের নাম দিছে। এই নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার কিংবা রাজউকের নাম দেয়া হোক।’

নাম পরিবর্তন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব হামিদ আহমেদ জানান, ২০০৯ সালেই স্কুলটির নাম থেকে সিরাজ মিয়ার নাম বাদ দিয়ে অন্য নাম দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে একটি লিখিত আবেদন পাঠানো হয়।

আহ্বায়ক জহিরুল আলম দিপু বলেন, দীর্ঘ ১১ বছরেও এর কোনো সমাধান হয়নি কেন জানা নেই। এটা খুবই রহস্যজনক। 

মানববন্ধনে ‘কুখ্যাত রাজাকার সিরাজ মিয়ার নামে বিদ্যালয়ের নাম বাতিল করতে হবে’, ‘চোরাকারবারি-দুর্নীতিবাজ-গোল্ডেন মনিরের পিতার নামে বিদ্যালয়ের নাম মানি না’, ‘গোল্ডেন মনিরের বিচার চাই’, ‘গোল্ডেন মনিরের সহযোগী রাজউকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে’ লেখা ব্যানার-ফেস্টুন প্রদর্শন করেন অংশগ্রহণকারীরা।

এ সময় তারা ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই, শেখ হাসিনার বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’ লেখা স্লোগান দিতে থাকেন।

কে এই গোল্ডেন মনির

র‍্যাবের অভিযানে গ্রেফতারের পর গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে আলোচনায় উঠে আসেন মনির হোসেন, যাকে মেরুল বাড্ডার মানুষ ‘গোল্ডেন মনির’ নামেই চেনে।

মেরুল বাড্ডায় মনিরের ছয়তলা বাড়িতে র‍্যাব-৩ ২০ নভেম্বর শুক্রবার মধ্যরাতে আকস্মিক অভিযান শুরু করে, যা চলে পরদিন সকাল পর্যন্ত।

ওই বাড়ি থেকে তখন ৯ লাখ টাকা মূল্যমানের বিদেশি মুদ্রাসহ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, চার লিটার মদ, ৮ কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল, কয়েকটি গুলি উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব জানিয়েছে, ব্যবসা নয়, কার্যত সোনা চোরাচালানই ছিল মনিরের ব্যবসা। পরে তিনি জড়িত হন জমির ব্যবসায়।

র‌্যাবের ভাষ্য, গামছা বিক্রেতা থেকে জমির ব্যবসার ‘মাফিয়া’ হয়ে ওঠা মনিরের বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ার বিষয়টিও এই অভিযানের পর সামনে এসেছে।

বাহিনীটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মনিরের বাবা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকার নিউ মার্কেট ও গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় ফেরি করে গামছা বিক্রি করতেন। পরে মনিরও একই ব্যবসায় শুরু করেন।

এভাবে তিনি ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে ব্যাংকক-সিঙ্গাপুরে আসা-যাওয়ার মাধ্যমে ল্যাগেজ ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসার আড়ালে তিনি স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসায় জড়িয়ে যান।

র‍্যাব জানায়, স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসার মধ্যেই ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মনির জমির ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।

তখন গণপূর্ত ও রাজউকের সঙ্গে তার সম্পর্ক গাঢ় হয়। সখ্য গড়ে তোলেন এক মন্ত্রীর সঙ্গে। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। মনির ঢাকা ও আশপাশে গত কয়েক বছরে ২ শতাধিক প্লটের মালিক হন।

গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় তিনটি মামলা করে র‍্যাব। 

এ বিভাগের আরো খবর